বুয়েট, চুয়েট, কুয়েটের চার শিক্ষার্থী পেলেন পুরস্কার
প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে ‘ইয়ং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ দেয় হোন্ডা ফাউন্ডেশন। সংক্ষেপে এই প্রকল্পকে বলা হয় ‘ওয়াই-ই-এস প্রোগ্রাম’। এ বছর এই পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মাশিয়াত মোস্তাক ও রিজওয়ানা রহিম, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ইফতেখার ইবনে জালাল এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) খাজা শাহরিয়ার।
নির্বাচিত চারজন হোন্ডা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাবেন তিন হাজার মার্কিন ডলার। পুরস্কারের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের আরও দুটি সুযোগ দেওয়া হবে, যেকোনো একটি তাঁরা নিতে পারবেন। প্রথমটি হলো জাপানে ৭ হাজার মার্কিন ডলার সম্মানীসহ ১০ সপ্তাহের বেশি শিক্ষানবিশির সুযোগ। দ্বিতীয়টি হলো আগামী চার বছরের মধ্যে জাপানে স্নাতকোত্তর বা পিএইচডির জন্য ১০ হাজার মার্কিন ডলারের বৃত্তি।
তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁদের পূর্ববর্তী প্রতিটি সেমিস্টারে ন্যূনতম ৩.২৫-এর ওপর সিজিপিএ আছে, শুধু তাঁরাই এ পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশে বুয়েট, চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েটের ৩০ জন করে মোট ১২০ জন শিক্ষার্থীর আবেদনের সুযোগ আছে।
ইয়ং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ডের বাংলাদেশ অঞ্চলের সেক্রেটারি আখতারুজ্জামান চৌধুরী জানান, ওয়াই-ই-এস প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য একটি নিবন্ধ লিখতে হয়। বর্তমান বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কোনো চাঞ্চল্যকর বিষয়ে শিক্ষার্থীর ভাবনা কী এবং সেটা কীভাবে দেশ-বিদেশে প্রভাব ফেলতে পারে, সেটিই নিবন্ধের বিষয়। এরপর মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে চারজনকে নির্বাচন করা হয়।
বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিয়া রিজওয়ানা বলেন, ‘২০২১ সালে প্রথম এই পুরস্কারের কথা জানতে পারি। দেখলাম ক্যাম্পাসের পরিচিত কিছু তুখোড় মেধাবী মুখকে এ সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। বুয়েটে ক্লাস শুরুর পর থেকেই ছবি আঁকা, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা, প্রজেক্ট এবং রিসার্চভিত্তিক সব কাজেই যুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি। শুধু একাডেমিক ফলের ওপর ভিত্তি করে এ পুরস্কার দেওয়া হয় না; বরং প্রকৌশলী হয়ে ওঠার পুরো যাত্রাই মূল্যায়ন করা হয়।’
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মাশিয়াত মোস্তাক জানান, তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি তিন বছর ধরে একটি বেসরকারি সংস্থায় সেবামূলক কাজ করছেন। সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের পড়ার আগ্রহ বাড়াতে কাজ করেন তিনি। বুয়েটের বিভিন্ন সংগঠনেও যুক্ত আছেন। সাক্ষাৎকারের সময় এ বিষয়গুলোই প্রাধান্য পেয়েছে। মাশিয়াত বলেন, ‘ইন্টারভিউটা একটু অন্য রকম ছিল। অনেক কিছু শেখার ও নিজের মধ্যে নেওয়ার চেষ্টা করেছি, যেন ভবিষ্যতে এ রকম ইন্টারভিউতে ভালো করতে পারি।’
চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইফতেখার ইবনে জালাল গ্রিন টেকনোলজি নিয়ে বেশ কিছু কাজ করেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন তিনি। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি নিয়ে কাজের সুবাদেই ইফতেখার ওয়াই-ই-এস প্রকল্পে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চুয়েটে প্রথমবারের মতো এমন অর্জন করতে পেরে আমি খুব খুশি। এ অর্জন গোটা চুয়েট পরিবারের।’
কুয়েটের এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের খাজা শাহরিয়ারের সঙ্গেও কথা হলো। তিনি জানান, করোনার বিশাল ছুটিতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এসব প্রতিযোগিতায় সাফল্যই তাঁকে এগিয়ে রেখেছে। এমন সম্মান প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের ভীষণ অনুপ্রাণিত করে বলে মনে করেন তিনি।