২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

যেভাবে খাবারে ছত্রাক ঠেকানো যায়

খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে ছত্রাক থেকে মুক্ত রাখা যাবে
ছবি: আনস্প্ল্যাশ

চারপাশ স্যাঁতসেঁতে আর ভ্যাপসা গরম। এমন আবহাওয়াতে বাড়তি ঝামেলা দেখা দেয় খাবারেও। বিশেষ করে যেসব খাবার একটু পচনশীল, তাতে সহজেই ছত্রাক জমে। এতে খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে সেই খাবার।

হয়তো একটু শখ করে বানিয়েছেন আচার, জ্যাম-জেলি, বিস্কুট বা কেক। কিন্তু খেতে নিয়ে দেখলেন সর্বনাশ। খাবারের ওপরে ছত্রাকের প্রলেপ। এ ছাড়া কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম খুবই নাজুক খাবার। আবার পিনাট বাটার, পাউরুটি, স্যান্ডউইচও আছে এই তালিকায়।

ঘরের এই খাবারগুলো কীভাবে যত্নে সংরক্ষণ করবেন, অনেকে সেটা বুঝে উঠতে পারেন না। খাবারে ছত্রাক যাতে না জমে, সে জন্য দরকার একটু যত্ন। যাতে পুষ্টিগুণও বজায় থাকে ঠিকঠাক।

ছত্রাক অনেক ধরনের হয়। তবে দুই ধরনের ছত্রাক বেশি চোখে পড়ে। একধরনের ছত্রাক হয় তুলার মতো সাদা আর অন্য এক ধরন হয় পলিথিনের মতো খুবই পাতলা প্রলেপে।

গভর্নমেন্ট কলেজ অব হিউম্যান সায়েন্সের (সাবেক সরকারি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ) খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন বললেন, ‘অনেক সময় খাবারের ছত্রাক খালি চোখে দেখাও যায় না। প্রাথমিকভাবে দেখলে মনে হয়, ছত্রাক ওপর দিয়ে আছে কিন্তু ছত্রাকের শিকড় খাবারের একবারে নিচ থেকেই শুরু হয়। তাই ওপর থেকে একটু খাবার ফেলে খাওয়ার ভুল ধারণা রাখা যাবে না। ছত্রাক পড়লে পুরো খাবারই ফেলে দিতে হবে। ছত্রাক পড়লে প্রথমেই নষ্ট হয় খাবারের ভিটামিন ও মিনারেল। এরপর ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে খাবারের প্রোটিন।’

তবে ছত্রাক যাতে খাবারে না জমে, সে জন্য আগে থেকে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিলেন এই শিক্ষক। একেক ধরনের খাবারের ক্ষেত্রে একেক পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়।

জ্যাম–জেলি

বাইরে থেকে কেনা জ্যাম–জেলি সংরক্ষণকারী অনেক ধরনের উপাদান দেওয়া হয়। তাই সহজে ছত্রাক পড়ে না। কিন্তু ফ্রিজে রাখা এসব খাবার যখন লম্বা সময় স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা হবে, তখনই ছত্রাক তৈরি হবে। তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তন ছত্রাক হওয়ার অন্যতম কারণ। তাই কাজ শেষ হলেই ফেলে না রেখে আবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে।

আচার

আচার এমন এক খাবার, খুঁজলে হয়তো সব বাড়িতেই মিলবে। নানা রকম মসলা আর তেলে ডোবানো আচারের মজাই আলাদা। কিন্তু যত্নের অভাবে সব থেকে দ্রুত ছত্রাক পড়ে আচারে। আচার রোদে দেওয়া তো অনেক পুরোনো ও কার্যকর নিয়ম। এ ছাড়া আচার খাওয়ার সময় চামচ বা ছুরি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। অপরিষ্কার বা পানি লাগানো চামচ ব্যবহারে আচারে ছত্রাক পড়ে। এ ছাড়া বায়ুরোধী কাচের পাত্রে আচার রাখলে ফাঙ্গাস পড়বে না। সাধারণ কাচের বয়াম হলে বোতলের মুখে রান্নাঘরের টিস্যু দিয়ে তার ওপর মুখ ভালোভাবে লাগিয়ে দিলে বাতাস রোধ হবে। ফলে ছত্রাক পড়ার আশঙ্কা কমে।

বাদাম

বাদাম অনেক দিন সংরক্ষণ করতে চাইলে কিনে এনে ওভেনে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড গরম করে নেওয়া যায়। এ ছাড়া চুলায় তাওয়া বসিয়ে ৩-৪ মিনিট টেলে নিলে একই ফল পাওয়া যাবে। পরে ঠান্ডা করে কাচের বয়ামে সংরক্ষণ করা যাবে।

বিস্কুট

বিস্কুটে তেলের পরিমাণ বেশি ও পানির পরিমাণ একটু কম হলে ছত্রাক পড়ার আশঙ্কা কমে। অনেক দিন ধরে খেতে চাইলে ছোট ছোট প্যাকেটে রাখতে হবে। খাওয়ার সময় একটি প্যাকেট যেন বের করা যায়। বিস্কুটে বেশি বাতাস লাগলে ছত্রাক পড়ে।

পাউরুটি

ঘরে পাউরুটি বানালে শুকনা ইস্ট ব্যবহার করতে হবে। এতে রুটি ছত্রাকমুক্ত থাকবে। এ ছাড়া অনেকেই ফ্রিজের সাধারণ তাপমাত্রার অংশে পাউরুটি রাখেন। এতে রুটিতে ছত্রাক পড়ে। তাই ভালো উপায় হলো ডিপ ফ্রিজে পাউরুটি রাখা। খাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে নামালেই রুটি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

পিনাট বাটার

বাদামে যেহেতু ছত্রাক পড়ে, তাই পিনাট বাটার ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। মুখ ভালোভাবে বন্ধ করতে হবে, যেন বাতাস না ঢোকে।

স্যান্ডউইচ

স্যান্ডউইচ এমন একটি খাবার, যা চাইলেও ২৪ ঘণ্টার বেশি সংরক্ষণ করা উচিত নয়। স্বাভাবিক ফ্রিজে পাতলা পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে স্যান্ডউইচ এক দিন পর্যন্ত রাখা যায়।