শীতে শতরঞ্জিতে সাজুক অন্দর

অন্দরসজ্জার রঙিন এক অনুষঙ্গ শতরঞ্জি
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

শীতের সময়টায় অন্দরে চাই আরাম। চাই স্বস্তি। ঠান্ডা মেঝে ঢেকে রাখার জন্য চাই আরামদায়ক একটা অনুষঙ্গ। শতরঞ্জি হতে পারে আদর্শ।

শীতে বসার ঘরের মেঝের এক পাশে শতরঞ্জি বিছিয়েই চলতে পারে পারিবারিক আড্ডা। ছুটির দিনে শতরঞ্জির ওপর নকশিকাঁথা মুড়ি দিয়ে আয়েশ করে বসে টেলিভিশনও দেখা যেতে পারে। শিশুর খেলার জায়গাও হতে পারে মেঝেতে বিছানো শতরঞ্জি।

সাদাসিধে, হালকা রঙের অন্দরে উজ্জ্বল, রঙিন শতরঞ্জি দিয়ে সৃষ্টি করা যায় অনিন্দ্যসুন্দর রঙিন আবহ, যা চোখের জন্যও স্বস্তিদায়ক। এমনটাই জানালেন আরএমএ আর্কিটেক্টসের প্রধান স্থপতি রাফিয়া মারিয়াম আহমেদ।

শীতে ঠান্ডা মেঝে ঢেকে রাখার আরামদায়ক এক অনুষঙ্গ শতরঞ্জি
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

রঙের পরশ

অন্দরসজ্জার রঙিন এক অনুষঙ্গ শতরঞ্জি। শতরঞ্জি থেকে একটি রং বেছে নিয়ে হালকা, নিরপেক্ষ রঙের অন্দরে অন্য কোনো অনুষঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতে অন্দরের পরিবেশে আসবে রঙের দারুণ এক সামঞ্জস্য।

ধরা যাক, বসার ঘরের সাদামাটা নকশার সোফাটি চাঁপা সাদা, হালকা ধূসর, বিস্কুট বা অন্য কোনো নিরপেক্ষ রং। এ ঘরে বিছানো শতরঞ্জির হলুদ রংটি কিন্তু ব্যবহার করা যেতে পারে সোফার কুশন কভারে কিংবা সোফা আর কুশন সবটাই নিরপেক্ষ রঙের হলে সোফার ওপর রেখে দিতে পারেন হলুদ রঙের একটি থ্রো।

আয়েশি সময়ে শতরঞ্জি

মোগল সম্রাট আকবরের দরবারে জায়গা করে নিয়েছিল শতরঞ্জি। আয়েশি এই অনুষঙ্গ আজও আপনার পারিবারিক বসার ঘরে অনায়াসেই বিছিয়ে নিতে পারেন। তার ওপর রাখতে পারেন কুশন। শিশু-কিশোর কিংবা পরিবারের কম বয়সী সদস্যটির ঘরের একটা পাশে একখানা শতরঞ্জি বিছিয়েও হতে পারে বসার ব্যবস্থা।

আধুনিক ফ্ল্যাট বাড়ির অধিকাংশই তো ছোটখাটো; ছোট্ট অন্দরে কম উচ্চতার বিছানা আর এক কোণে বিছানো শতরঞ্জিতেই জমতে পারে বন্ধুদের আড্ডা। বিছানা থেকে নেমে প্রথমে একটু আরামে পা দুখানিও রাখা যাবে। আরামের জন্য শতরঞ্জির ওপর রাখতে পারেন বড় কুশন। শতরঞ্জির পাশে রাখা যেতে পারে সুন্দর একটি ল্যাম্পশেডও।

আয়েশি এই অনুষঙ্গ শতরঞ্জি ঘরে অনায়াসেই বিছিয়ে নিতে পারেন।
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

স্বকীয়তার উপস্থাপন

বাড়ির যেকোনো মানানসই জায়গায় আমাদের নিজস্বতার পরিচায়ক এই অনুষঙ্গ রাখতে পারেন। দেশিয় ধাঁচের অন্দরে অতিথিদের বসার ঘরেও অনায়াসেই রাখা যায় শতরঞ্জি। শীতে অনেক বাড়িতেই কার্পেট ব্যবহার করা হয়।

তবে এর রক্ষণাবেক্ষণ তুলনামূলক কঠিন। তাই তাতে ধুলা জমে সহজেই এবং অণুজীব জন্মে বিস্তর, ফলে অনেকে সৌন্দর্যবর্ধক এই অনুষঙ্গের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অন্যদিকে দেশজ অনুষঙ্গ শতরঞ্জির রক্ষণাবেক্ষণ বেশ সহজ। তাই এ থেকে ওভাবে কারও অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি নেই।

শতরঞ্জির যত্নআত্তি

রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা শিকদার জানালেন শতরঞ্জির যত্নআত্তির নিয়মকানুন। শীতে বাতাসে ধুলাময়লা বাড়ে। অন্দরের আয়েশি জায়গাও হয়ে উঠতে পারে ধুলার রাজ্য। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য রোজই তাই ভালোভাবে ঝেড়ে ফেলা উচিত শতরঞ্জি।

রোজ অল্প সময়ের জন্য হলেও শতরঞ্জি রোদে রেখে এরপর ঝেড়ে নেওয়া ভালো। রোজ না পারলে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন শতরঞ্জি রোদে দেওয়া আর ঝেড়ে ফেলার কাজটি করতে হবে। শতরঞ্জির অন্যতম সুবিধা হলো এটি সহজেই ধুয়ে নেওয়া যায়। দুই সপ্তাহ পরপর শতরঞ্জি ধুয়ে নেওয়ারও পরামর্শ দিলেন এই বিশেষজ্ঞ। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে পরিষ্কার করা উচিত শতরঞ্জি; গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয়।