রান্নাঘরের কাজে খেয়াল রাখুন এই পাঁচ বিষয়
রান্নাঘরের সিঙ্কে বাসন ধোয়ার সময় হঠাৎ পানি আটকে গেলে বেশ বিপত্তিতেই পড়তে হয়। খাবারের উচ্ছিষ্ট, চর্বি, সবজির খোসা জমতে জমতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে ঈদের ছুটির সময় কিংবা বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নের আগমুহূর্তে যদি এমনটা ঘটে, তাহলে দুর্ভোগের আর শেষ থাকে না। রান্নাঘরের কাজে কিছু গাফিলতির দরুনই যে কেবল এমন বিপত্তি বাধে, তা নয়; অসতর্ক মুহূর্তেও ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
তাই চুলা জ্বালানো, রান্না, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারসহ গৃহস্থালির প্রতিটি কাজেই যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। ব্যস্ততম মুহূর্তেও এমন কিছু করা উচিত নয়, যা থেকে বিপদ ঘটতে পারে। বাড়ির প্রত্যেক সদস্য এবং গৃহসহায়তা কর্মীকে এসব বিষয় ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। এমনটাই বলছিলেন ঢাকার গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসমিয়া জান্নাত।
পানিপ্রবাহের স্থান
সিঙ্কে, কলপাড়ে এবং বেসিনেও এমন কিছু ফেলবেন না, যা পরে পানিপ্রবাহের পথ আটকে দিতে পারে। শাকসবজির খোসা বা আঁশজাতীয় অংশ, মাছের আঁশ, মাংসের চর্বি বা ছোট হাড়, চুল, সুতা—কোনো কিছুই ফেলবেন না এসব স্থানে। ধোয়ার আগে বাসনে লেগে থাকা চর্বি টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিয়ে বর্জ্যের বালতিতে ফেলে দেওয়া ভালো।
এসব স্থানে পানিপ্রবাহের পথে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার কুসুম গরম পানি ঢালুন। পানি ঢালার সময়ই লম্বা, শক্ত কাঠি দিয়ে ছিদ্রের ভেতরে বেশ কয়েকবার ধাক্কা দিন। এরপর ডিটারজেন্ট মেশানো কুসুম গরম পানি ঢেলে দিন।
গ্যাস ও জ্বালানির অন্যান্য উৎস
রান্নাঘরে সব সময় বাতাস চলাচলের সুযোগ রাখা উচিত।
চুলা জ্বালানোর আগে অবশ্যই সব দরজা-জানালা খুলে দিয়ে কিছুক্ষণ বাতাস প্রবাহিত হতে দিন। দরজা-জানালা বেশ কয়েকবার এপাশ-ওপাশ করলে জমে থাকা বাতাস সরে যায়।
গ্যাস লিকেজ সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
গ্যাসের চুলা এবং সংযোগ লাইন পরিষ্কার রাখুন। কিন্তু ভুলেও এসবে পানি লাগাবেন না। কোনো অবস্থাতেই গ্যাসের লাইন নাড়িয়ে দেওয়া যাবে না।
যা কিছু উত্তপ্ত
উত্তপ্ত জিনিস সাবধানে স্পর্শ করুন। গরম জিনিস রাখতে হবে শিশু বা পোষা প্রাণীর নাগালের বাইরে। গরম পাত্র নামানোর সময় গ্যাস বা বিদ্যুতের লাইনে যাতে লেগে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম
ভেজা হাতে সুইচ বা অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্পর্শ করবেন না।
ওভেন, ব্লেন্ডার, মিক্সার প্রভৃতি কোনো সরঞ্জামই সব সময় চালু রাখবেন না। ব্যবহার শেষে সুইচ বন্ধ করে প্লাগ খুলে রাখুন। সব বৈদ্যুতিক যন্ত্রই গ্যাসের চুলা থেকে দূরে সেট করা উচিত।
ধারালো জিনিস
ধারালো জিনিস শিশু ও পোষা প্রাণীর নাগালের বাইরে রাখুন। এসব জিনিস অল্প সময়ের জন্যও অসাবধানে ফেলে রাখবেন না।
অন্দরের কাজ
ক্যাবিনেট করা, পেরেক ঠোকা ও দেয়ালের পুরুত্ব ভেদ করার মতো যেকোনো কাজ করার আগে ওই ঘরের গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের লাইনের অবস্থান এবং দেয়ালের নকশা সম্পর্কে জেনে নিন। নইলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
আরও যা
শিশুরা যাতে একা রান্নাঘরে না যায়। কম বয়সীদের দিয়ে রান্নাবান্নার কাজ করানো থেকে বিরত থাকুন।
ধারালো বর্জ্য (যেমন ধারালো টিনের কৌটা বা এর ঢাকনা) একটি আলাদা মুখবন্ধ পাত্রে করে ফেলুন।
ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু, সাবান প্রভৃতি রাসায়নিকসমৃদ্ধ পদার্থের খালি মোড়ক, মরিচের বোঁটা বা মরিচ আলাদা পলিথিন বা প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভালোভাবে মুখ বন্ধ করে ফেলতে হবে।