ঘরে কোথায় কোন আলো ব্যবহার করবেন
আমাদের বাড়িতে প্রাণের সঞ্চার করে আলো। একটি বাড়িতে বিভিন্ন ঘরের ব্যবহার ও কাজের ধরন বুঝেই ঘরের আলোর ব্যবস্থা করতে হয়। শুধু প্রয়োজনই নয়, সঠিক আলোর ব্যবহার বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে ঘরের সৌন্দর্য। ঘরের অন্দরসজ্জা যতই মনোমুগ্ধকর হোক না কেন, সঠিক আলোর প্রয়োগের অভাবে সেটি অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। আলোছায়ার খেলা একটি ঘরের আবেদনকে বাড়িয়ে তোলে বহুগুণ, যেকোনো ঘরই হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর।
অনেক ঘরেই শুধু একটি আলোর উৎস যথেষ্ট নয়। সে ক্ষেত্রে একাধিক আলোর উৎসের ব্যবস্থা রাখা ভালো। শুধু দেয়াল থেকেই নয়, প্রয়োজন বুঝে সিলিং থেকেও ঝুলিয়ে দিতে পারেন নানা রকম বাতি। এ ছাড়া ঘরে রাখতে পারেন টেবিল ল্যাম্প বা ফ্লোর ল্যাম্প। এমন জায়গাগুলোয় নজর দিন, যেখানে আলো সহজে পৌঁছায় না। যেমন ঘরের কোনো অন্ধকার কোণ, করিডর বা খাবার ঘর।
এখন বাজারে তিন ধরনের আলোর দেখা মেলে—উজ্জ্বল সাদা, সাদা ও হলুদের মিশ্রণ এবং হলদে আলো। প্রয়োজন বুঝে ঘরে এই আলোর সমন্বয় করা যেতে পারে।
প্রাকৃতিক আলোর ক্ষেত্রেও লক্ষ করলে দেখা যায়, দিনের প্রথম অংশের আলো উজ্জ্বল সাদা হয় এবং বিকেলের পর থেকে হলুদাভ হতে শুরু করে। আর তাই প্রকৃতিগতভাবেই উজ্জ্বল সাদা আলো আমাদের উজ্জীবিত করে এবং কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। উষ্ণ বা হলুদ আলো আমাদের বিশ্রামের সময় প্রশান্তি দেয়। তাই পড়ার টেবিল, রান্নাঘর প্রভৃতি কাজের জায়গায় সাদা আলো ব্যবহার করা ভালো। খেয়াল রাখা উচিত টেবিলের বা রান্নাঘরের কাউন্টারের ওপর যাতে আলো যথাযথভাবে পড়ে।
আবার খাবার ঘর বা বসার ঘরে দুই ধরনের আলোই রাখতে পারেন। বসার ঘরে দেয়ালের আলোর পাশাপাশি সিলিং থেকেও ঝাড়বাতি ঝোলানো যায়, আবার এককোণে ফ্লোর ল্যাম্প রাখা যায়। সোফার পাশের টেবিলে দিতে পারেন টেবিল ল্যাম্প। তাহলে প্রয়োজন বুঝে নানা রকম আলোর ব্যবহারে আনতে পারবেন ভিন্নমাত্রা, যা আপনার অতিথি আপ্যায়নকে করবে আরও আকর্ষণীয়। খাবার টেবিলের ওপর ঝোলাতে পারেন সুদৃশ্য কোনো ঝুলবাতি যা হতে পারে কাপড়, বাঁশ, বেত বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক উপাদানের তৈরি।
শোবার ঘর যদি শুধু বিশ্রামের কাজেই লাগান, তাহলে সেখানে হলদে আলো ব্যবহার করা যায়। হলদে বা উষ্ণ আলো আমাদের স্নায়ুকে প্রশমিত করে, তাই শোবার ঘরে এই আলো ব্যবহার করলে ঘুম ভালো হয়। চাইলে দেয়ালে রাখতে পারেন উজ্জ্বল আলো আর বিছানার পাশের টেবিলে ল্যাম্প।
একই ঘরে কয়েক রকম আলোর উৎস এবং কয়েক ধরনের আলোর ব্যবস্থা রাখলে প্রয়োজন বুঝে বিভিন্ন সময় নানা রকম আলোর প্রয়োগ করা যায়।
লেখক: স্থপতি ও চেয়ারম্যান, প্রাচ্য সলিউশন্স লিমিটেড।