হেপাটাইটিস এ রোগী ঘরেই সুস্থ হয়ে যান
পড়াশোনা করে এ পাওয়াটা আনন্দের, সঙ্গে প্লাস যোগ হলে তো কথাই নেই। তবে এ–এর আগে যদি বসে হেপাটাইটিস, তবে সেই পজিটিভ রিপোর্টে খুশি হন না কেউ। হেপাটাইটিস এ একটা ভাইরাস। যা ছড়ায় দূষিত পানি আর খাবারের মাধ্যমে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় লিভার (যকৃৎ)।
লিভারে হেপাটাইটিস এ হলে সাধারণত জন্ডিস হয়, তবে শুরুতেই নয়। শুরুটা হয় সাধারণত জ্বর, বমি বা বমিভাব, ক্ষুধামান্দ্য, পেটের ডান পাশের ওপর দিকে একটু ব্যথা ইত্যাদি দিয়ে। ৩০-৩৫ শতাংশ হেপাটাইটিস এ রোগীর জন্ডিস হয়, বাকিরা টেরও পান না কবে, কোথায়, কীভাবে তাঁকে হেপাটাইটিস এ ভাইরাসে আক্রান্ত করল।
হেপাটাইটিস এ ভাইরাস মূলত শিশুদের লিভারকে সহজে আক্রান্ত করে। বড়দের খুব একটা হয় না, তবে আজকাল কিছু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। জীবনে একবার হেপাটাইটিস এ ভাইরাস সংক্রমণ হয়ে গেলে সারা জীবনের জন্য তার ওই প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। সাধারণত ১৫ বছরের আগেই এ দেশের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের কার্যকর টিকা আছে। সাধারণত যেসব রোগীর লিভার সিরোসিস, কিডনি ফেইলিউর, ক্যানসারের মতো জটিল রোগ থাকে, তাঁদেরই আমরা হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের ভ্যাকসিনটা দিয়ে থাকি।
হেপাটাইটিস এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সাধারণত নিজে থেকেই ভালো হয়ে যান। তবে যাঁদের জন্ডিস বেশি, বিশেষ করে যাঁদের রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা ১০ মিলিগ্রাম বা তার বেশি কিংবা জটিল সমস্যা আছে, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া জরুরি। কখনো কখনো এই রোগের কারণে লিভার ফেইলিউরের ঘটনা ঘটে।
বছরের এই সময়ে এ দেশে বন্যা হয়, আবার গরমও পড়ে বেশ। মানুষের পানি ও খাবারের সংকট দেখা দেয়। ময়লা পানি, বাসি খাবার অনেকে খান। যে কারণে হেপাটাইটিস এ–তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কাজেই এই মৌসুমে হেপাটাইটিস এ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। সারা বছর তো বটেই, এই সময়ে বিশেষ নজর দিতে হবে পানি ও খাবারে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকলেই হেপাটাইটিস এ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।