স্তনের এক্স-রে ম্যামোগ্রাফি
ম্যামোগ্রাফি হলো স্তনের বিশেষ ধরনের এক্স–রে। এই পরীক্ষায় খুব সামান্যই তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহৃত হয়। ৫০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের নিয়মিত স্তনের ম্যামোগ্রাফি করালে লাভই বেশি বলে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত। তাই আন্তর্জাতিকভাবে ম্যামোগ্রাফি স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত।
ম্যামোগ্রাফি শুরুর বয়স
সাধারণভাবে ৫০ বছর হওয়ামাত্রই স্তন ক্যানসারের স্ক্রিনিংয়ে ম্যামোগ্রাফি শুরু করা উচিত। দুই থেকে তিন বছর অন্তর তা ৭০ বছর পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া উচিত। বেশি ঝুঁকিতে থাকা নারীদের ক্ষেত্রে বয়স ৪০ বছর পার হলেই ম্যামোগ্রাফি শুরু এবং প্রতি বছর একবার করে পরীক্ষা করা উচিত। তবে ৩০ বছরের কম বয়সে ম্যামোগ্রাফি অনুমোদনযোগ্য নয়।
ম্যামোগ্রাফি কীভাবে করা হয়
প্রথমে ম্যামোগ্রাফি যন্ত্রের দুই প্লেটের মধ্যে স্তন রাখা হয়। আস্তে আস্তে প্লেট দুটির মাধ্যমে স্তনের ওপর চাপ দেওয়া হয়। এরপর মেশিনের সুইচ টিপে ম্যামোগ্রাফি করা হয়। এই এক্স–রের সময় সামান্য ব্যথা বা অস্বস্তিবোধ হতে পারে। স্তনের কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন কিংবা স্তনে চাকা বা পিণ্ড হলে, ক্যালসিফিকেশন বা ক্যালসিয়াম ধাতু জমা হলে এ পরীক্ষার মাধ্যমে তা বোঝা যায়। চাকা, মিহি ক্যালসিয়াম দানার উপস্থিতি, বিন্যাসের ধরন এবং অন্যান্য অনেক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ক্যানসার সন্দেহ করা হয়। আগে কখনো ম্যামোগ্রাফি করা থাকলে তা নতুন ম্যামোগ্রাফির সঙ্গে তুলনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পরীক্ষা
ম্যামোগ্রাফি ফিল্মে সন্দেহজনক এলাকা নির্দেশ করা থাকে। তবে এতে নিশ্চিত হওয়া যায় না যে ক্যানসার হয়েছে। সন্দেহজনক জায়গার বায়োপসি পরীক্ষায় তা নিশ্চিত হতে হয়। অনেক সময় শারীরিক পরীক্ষায় স্তনে চাকা অনুভব করা গেলেও ম্যামোগ্রাফি তার ছবি ধারণ করতে পারে না। চাকার অবস্থানের কারণে এমনটা হতে পারে। অল্পবয়সী নারী, গর্ভবতী ও সন্তানকে স্তন পান করানো মায়ের ক্ষেত্রে স্তনগ্রন্থি ঘনভাবে বিন্যস্ত থাকায় এমনটা হয়। যেসব বয়স্ক নারীর স্তনগ্রন্থি ঘন, তাদের ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে অন্যান্য পরীক্ষা যেমন আলট্রাসনোগ্রাফি, এমআরআই ইত্যাদির সাহায্য নিতে হয়।
অধ্যাপক পারভীন শাহিদা আখতার, মেডিকেল অনকোলজিস্ট, শান্তি ক্যানসার ফাউন্ডেশন, ঢাকা
আগামীকাল পড়ুন: ফুসফুসের রোগ সিওপিডি
প্রশ্ন
উত্তর
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় ঘরে বসে কিংবা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপনার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান। উত্তর দেবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বয়স লিখতে ভুলবেন না।
ই–মেইলে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান:
[email protected]