শীত আসার সঙ্গে বেড়ে গেছে হাঁপানি রোগীদের কষ্ট। এ সময় হাঁপানি রোগীরা নিয়মিত ইনহেলার ব্যবহার করতে ভুলবেন না। কিন্তু ইনহেলার ব্যবহারের সময় অনেকেই স্পেসার ব্যবহার করেন না। স্পেসার মূলত প্লাস্টিকের তৈরি নল বা বোতলের মতো, যা একটি চেম্বার বা ইনহেলার গ্রহণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই স্পেসারের এক মাথায় থাকে মাউথপিস মাস্ক (মুখোশ) এবং একটি ভালভ বা সুইচ। এই ভালভ বা সুইচ শুধু শ্বাস নেওয়ার সময় খুলে যায় এবং এর ভেতর দিয়ে বাতাস ও ওষুধ শ্বাস গ্রহণের সময় প্রবেশ করে। শ্বাস ফেলার সময় ভালভটি বন্ধ হয়ে যায়।
স্পেসার ব্যবহারের আগে অবশ্যই ইনহেলারটি ঝাঁকিয়ে নিন। তারপর ইনহেলারটি স্পেসারের ছিদ্রে লাগান। এবার ইনহেলারে জোরে চাপ দিন। চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইনহেলারের ওষুধ স্পেসারে প্রবেশ করবে। এরপর স্পেসারের মাউথ পিসে মুখ লাগিয়ে ওষুধ শ্বাসের সঙ্গে নিন। আগে শ্বাস ফেলে দিয়ে ধীরে ধীরে লম্বা শ্বাস নিয়ে স্পেসারে রক্ষিত ওষুধ ফুসফুসে গ্রহণ করতে হবে।
স্পেসারের ভেতরে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড ওষুধ ভাসমান অবস্থায় রক্ষিত থাকার কারণে একই সময়ে শ্বাস নেওয়া ও ইনহেলারের ক্যানিস্টার চাপ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ইনহেলারের ক্যানিস্টারে চাপ দেওয়ার পর শ্বাস নেওয়ার পর ৫ সেকেন্ড সময় পাওয়া যায়। শ্বাসকষ্ট বেশি হওয়ার কারণে শ্বাস নিতে না পারলে আর চেষ্টা করার দরকার নেই। আপনি স্পেসারের মাউথপিসে মুখ লাগিয়ে শ্বাস নিতে থাকুন ও ফেলতে থাকুন এবং সুবিধামতো সময়ে ইনহেলারের ক্যানিস্টারে চাপ দিন। তারপর অন্তত ৫ বার স্পেসার থেকে শ্বাস নিন এবং ফেলুন। প্রয়োজনমতো একইভাবে আবার ওষুধ নিন। শুধু ইনহেলার ব্যবহার করার চেয়ে স্পেসারের মাধ্যমে ইনহেলার ব্যবহার করলে ওষুধ ফুসফুসের ভেতর যায় প্রায় দ্বিগুণ। ফলে ইনহেলারের কার্যকারিতা বাড়ে অনেক বেশি। শিশুদের স্পেসার ব্যবহার করা উচিত। স্পেসার ছাড়া এরা ইনহেলার ঠিকমতো টানতে পারে না বলে খুব কম পরিমাণ কার্যকারিতা পায়। আবার শ্বাসের মাধ্যমে স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ নিলে মুখে বা গলায় ক্যানডিডা নামক ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে, কারও কারও গলার স্বর মোটা হয়ে যায়। এসব ক্ষতির আশঙ্কা স্পেসার ব্যবহার করলে থাকে না বললেই চলে।