মেরুদণ্ডের আঘাত থেকে সাবধান

প্রতীকী ছবি

মেরুদণ্ডের আঘাত থেকে পক্ষাঘাত থেকে শুরু করে জীবন সংশয় পর্যন্ত হতে পারে। প্রতিবছর অনেক মানুষ মেরুদণ্ডে আঘাতের কারণে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে। মেরুদণ্ডে আঘাত পেলে তাই দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

আঘাত লাগে যেভাবে

নানাভাবেই মেরুদণ্ডে আঘাত লাগতে পারে। যেমন ওপর থেকে পড়ে গিয়ে (যেমন গাছ থেকে পড়া), পেছন থেকে ধাক্কা লেগে (বিশেষ করে মোটর দুর্ঘটনা), পা পিছলে পড়ে গিয়ে অথবা কোনো ভারী বস্তু তুলতে গিয়ে আঘাত লাগতে পারে।

যা হতে পারে

মেরুদণ্ডের কোন জায়গায় কতটা তীব্র আঘাত লেগেছে, উপসর্গের তীব্রতা তার ওপর নির্ভর করে। এ ছাড়া রোগীর বয়স, অন্য কোনো রোগ ইত্যাদিও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সামান্য আঘাতে কিছু ব্যথা ছাড়া আর কিছু না–ও থাকতে পারে। কিন্তু মেরুদণ্ডের ভেতরে যে স্পাইনাল কর্ড বা মেরুরজ্জু আছে, তাতে আঘাত লাগলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তীব্রতা ভেদে কোমরব্যথা, কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়া, পা অবশ বোধ করা বা একেবারেই নাড়াতে না পারা, প্রস্রাব–পায়খানা বন্ধ হয়ে যাওয়া বা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি সমস্যাও হতে পারে।

যা করা উচিত

কোনো দুর্ঘটনায় কিংবা পড়ে গিয়ে কোমর বা মেরুদণ্ডে আঘাত পেলে আহত ব্যক্তিকে খুব বেশি নাড়াচাড়া করা উচিত নয়। আহত ব্যক্তির ঘাড়ের নিচে একটি তোয়ালে রোল করে রেখে চিত করে স্থীরভাবে শুইয়ে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পা ধরে টানাটানি বা পাঁজাকোলা করে ওঠানো ইত্যাদি করলে আঘাত আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ব্যথা কমাতে ব্যথানাশক দেওয়া যেতে পারে। তবে স্নায়ুর সমস্যা থাকলে নিউরোসার্জনের পরামর্শ এক্স–রে, প্রয়োজনে এমআরআই করতে হবে।

সতর্কতা

মেরুদণ্ডে আর মেরুরজ্জুতে আঘাতের পরবর্তী সমস্যাগুলো জটিল হয়। তাই এ ধরনের আঘাত এড়াতে সব সময়ই সতর্ক থাকতে হবে।

* ওপর থেকে কিছু নামানোর সময় অবশ্যই পায়ের ওপর চাপ কমাতে টুল–জাতীয় উঁচু জিনিসের ওপর দাঁড়ান। বাথরুমে বয়স্ক ব্যক্তিদের পড়ে যাওয়া ঠেকাতে হাত দিয়ে ধরা যায়, এমন রেলিং–জাতীয় জিনিস সংযোজন করলে ভালো হয়। মেঝে পিচ্ছিল যেন না থাকে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। সিঁড়ি দিয়ে ওঠা–নামার সময় সাবধান থাকতে হবে।

* ভারী জিনিস হঠাৎ করে তুলতে যাবেন না।

* গাড়িতে ভ্রমণের সময় সিটবেল্ট পরুন।

* হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস থাকলে চিকিৎসা নিন। বয়স্ক ব্যক্তিদের মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো এটি।

লেখক: বিভাগীয় প্রধান, নিউরোসার্জারি, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল