নানা কারণে মুখে ঘা হয়। তার আছে নানা ধরনও। কৃত্রিম দাঁত, ব্রিজ ক্রাউন, ফিলিং বা দাঁতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির আঘাত বা ঘর্ষণের কারণে মুখের ভেতর, জিব বা মাড়িতে ঘা হতে পারে। ধুমপায়ীদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মাড়ি; এ ছাড়া সাদা ক্ষত হতে পারে মুখের ভেতর, জিব ও ঠোঁটে। অধিক অ্যালকোহল পানের কারণেও হতে পারে ক্ষত; এটা বেশি হয় চিবুকের নিচের অংশের ভেতর দিকে।
ক্যানডিডা নামের ছত্রাক সংক্রমণের কারণে মুখের ভেতর অনেকেরই ঘা দেখা দেয়। এর সাদা প্রলেপের মতো অংশ গবেষণাগারে পরীক্ষা করলে ছত্রাকের উপস্থিতি প্রমাণ করা যায়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গেলে (অপুষ্টি, ডায়াবেটিস, রক্তশূন্যতা, দীর্ঘমেয়াদি রোগবালাইয়ের কারণে) এই সংক্রমণ হয়।
এসব কারণ ছাড়াও নানা জটিল রোগের কারণে মুখের ভেতর ঘা হয়। যেমন: লাইকেন প্লেনাস, লুপাস, সোরিয়াসিস ইত্যাদি। মুখের ভেতর যক্ষ্মা সংক্রমণও হতে পারে। ভিটামিনের অভাব, রাসায়নিক পদার্থের প্রভাব বা গ্রন্থির রোগের কারণে সাদাটে একটু উঁচু ক্ষত দেখা দেয়, যার নাম লিউকোপ্লেকিয়া। তবে মুখে ক্ষতের বিষয়ে সতর্কতা জরুরি। কারণ, এসব ক্ষতের কোনোটি ক্যানসারও হতে পারে।
কী করবেন?
মুখের যেকোনো ঘায়ের দ্রুত চিকিৎসা দরকার। অনেক সময় কারণ দূর করাই মূল চিকিৎসা। যেমন ঘর্ষণ বা আঘাতে কারণে ঘা হলে যে বস্তু দিয়ে ঘর্ষণ হচ্ছে, তা সরাতে হবে। ছত্রাক সংক্রমণের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছত্রাকরোধী মলম বা তরল ব্যবহার করা হয়। ধূমপান ও তামাক-জর্দা একেবারেই বর্জন করুন। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করুন, সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খান। দীর্ঘদিন ধরে মুখের ভেতর ঘা থাকলে এবং বারবার ঘা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী
দন্ত বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল