মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের কথা
ইদানীং মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিজ্ঞানী মহলে বেশ আলোচনা। ইউরোপ ও আমেরিকায় এর শঙ্কা বাড়ছে। এ রোগের মূলে আছে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস। একে বলা হচ্ছে ভাইরাল জুনোটিক রোগ। প্রাণী থেকে মানুষে, মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়।
এই ভাইরাসের বিচরণ মধ্য আর পশ্চিম আফ্রিকায়। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বৃষ্টি বনে (রেইন ফরেস্ট) থাকে সেসব প্রাণী, যাদের সঙ্গে আছে সেই ভাইরাস। তবে আফ্রিকার বাইরেও আছে এর বিস্তার। মানুষের সঙ্গে চলে আসে অন্য বসতিতে। এবার সে রকম শনাক্ত হলো এক লোকের মধ্যে, যিনি এসেছিলেন নাইজেরিয়া থেকে। ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকায় ছড়িয়েছে এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে।
মাঙ্কিপক্সের উপসর্গের মধ্যে আছে জ্বর, তীব্র মাথা ধরা, পেশি শুল, ব্যাক পেইন, শরীরে বল–শক্তি কম, গ্লান্ড ফোলা, ত্বকে ফুসকুড়ি (র্যাশ)। জ্বর হওয়ার ১ থেকে ৩ দিন পর ফুসকুড়ি, চ্যাপ্টা ক্ষত, ভেতরে হলুদ তরল পরে শুকায়, মামড়ি হয় আর খসে পড়ে। মুখে, হাতের তেলো আর পায়ের নিচে হয় ফুসকুড়ি। চোখে বা যৌনাঙ্গেও হতে পারে।
উপসর্গ থাকে ২ থেকে ৪ সপ্তাহ। এর পরে চলে যায় এমনিতেই, চিকিৎসা লাগে না। এর গুরুতর পরিণতি বিরল। শিশু, যাদের দেহ প্রতিরোধ দুর্বল, তাদের হতে পারে কখনো জটিল। ত্বক সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, হতবুদ্ধি, চোখের অসুখ, দৃষ্টি সমস্যা।
যাদের মাঙ্কিপক্স, তাদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে হতে পারে অন্যের। ফুসকুড়ি, দেহ তরল, ত্বক ক্ষত থেকে তরল, পুঁজ, রক্ত মামড়ি খুব সংক্রামক। সংক্রমিত ব্যক্তির পোশাক–পরিচ্ছদ, তোয়ালে—এসব সংক্রামক। মুখের আলসার ক্ষত, ঘা হতে পারে সংক্রামক।
শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। গুটিবসন্তের নতুন কয়েকটি টিকা মাঙ্কিপক্সের বেলায় সুরক্ষা দিতে পারে। ২০১৯ সালে অনুমোদন পাওয়া গুটিবসন্তের টিকা এমভিএ–বিএন (ইনভ্যামিউন, ইমভ্যানেক বা জাইনেওস নামেও পরিচিত) হতে পারে মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে কার্যকর। এ ছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়ানো এই পক্স থেকে দূরে থাকার উপায়।