মৌসুমটা নানা ধরনের মিষ্টি ফলের। পুষ্টিগুণে ভরা এসব ফল পরিমিত ও নিয়ম মেনে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা পূরণ করে। মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায়ও মৌসুমি ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে চাই কিছু সতর্কতা। যেমন—
আম: আমের মধ্যে আছে প্রাকৃতিক চিনি। দাঁতে লেগে থাকলে এই সুগার ক্যারিজ বা দাঁত ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। কিছুটা অ্যাসিডিক হওয়ায় আম খাওয়ার পর ভালোভাবে কুলি করা নিরাপদ। ব্রাশ করতে চাইলে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করা জরুরি। কারণ, অ্যাসিডিক পরিবেশে প্রতিরক্ষা আবরণ তুলনামূলক নরম থাকায় ব্রাশের ঘর্ষণে দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেকোনো অ্যাসিডিক ও মিষ্টিজাতীয় খাবার যত কম সময় দাঁতের সংস্পর্শে রাখা যায়, ততটাই ভালো। ভিটামিন সির উৎস হিসেবে কাঁচা আম উৎকৃষ্ট।
কাঁঠাল: কাঁঠালের ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম মুখের সার্বিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, প্রদাহ দমনে সহায়ক ও জীবাণুনাশক উপাদান থাকাতে কাঁঠাল উপকারী ফল। তবে অবশ্যই পরিমিত খেতে হবে।
লিচু: দাঁত, হাড় ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় লিচুতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম আছে। হাড়ের ক্ষয়রোধেও লিচুতে কিছু মিনারেল বিদ্যমান।
জাম: দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখা আর মুখের কমন ক্ষত বা আলসার প্রতিরোধে জাম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ডায়াবেটিস রোধেও এর ভূমিকা রয়েছে। এ ফল চোয়ালের হাড় ও হাড়ের সন্ধিকে ভালো রাখে।
তালের শাঁস: এতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, মাড়িকে সুস্থ রাখে। তালের শাঁসে রয়েছে ক্যালসিয়াম, যা দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।
সতর্কতা: ফল রোদে শুকিয়ে খাওয়া যায় অনেক দিন। তবে শুকনা ফল আঠাঁলো ও টক-মিষ্টি হওয়ায় দাঁতের প্রতিরক্ষা আবরণ নষ্ট হতে পারে। সকালে নাশতা ও রাতে খাবারের পর দুই মিনিট ধরে প্রতিটি দাঁতের পাঁচটি পৃষ্ঠ ভালো মানের টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার রাখার কোনো বিকল্প নেই। কারণ, মুখের মধ্যে প্রায় ৭০০ প্রজাতির জীবাণু সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে।
ডা. মো. আসাফুজ্জোহা, রাজ ডেন্টাল সেন্টার, কলাবাগান