বাড়িতে থেকেই যেভাবে ৩২ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন অনঘা

অনাঘা ঘরে তৈরি খাবার খেয়ে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করে ৬৩ কেজি ওজন কমিয়েছেন।
ছবি: সংগৃহীত

২০২০ সালের মে মাসে প্রথম যখন ওজন কমানোর মিশনে নামেন অনঘা, তখন তাঁর ওজন ছিল ৯৫ কেজি আর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যখন এই যাত্রা শেষ হয়, তখন তাঁর ওজন ৬৩ কেজি। ভারতের মুম্বাইয়ের মেয়ে অনাঘা ঘরে তৈরি খাবার খেয়ে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করে এই ওজন কমিয়েছেন।

এ ক্ষেত্রে তাঁর প্রধান অস্ত্র ছিল ধারাবাহিকতা আর অধ্যবসায়। এই দুই অস্ত্রকে সম্বল করে কোনো পুষ্টিবিদ ও সম্পূরক খাদ্য বা প্রচলিত ডায়েট ছাড়াই ওজন কমাতে পেরেছেন তিনি।

কীভাবে অনঘা ৩২ কেজি ওজন কমিয়েছেন, চলুন তাঁর কাছ থেকেই জেনে নিই।

টার্নিং পয়েন্ট

দেড় বছরে ৩২ কেজি ওজন কমিয়েছেন অনঘা। ‘আমি প্রায়ই “কোরা”তে (প্রশ্নোত্তরবিষয়ক মার্কিন ওয়েবসাইট) ওজন কমানো–সম্পর্কিত উত্তরগুলো পড়তাম এবং যাঁরা ওজন কমাতে সক্ষম হয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিতাম।’

ডায়েট অনুসরণ

ওজন কমানোর বিভিন্ন উপায় নিয়ে নিজেই কিছু গবেষণা করেন অনঘা। এসব থেকে জানতে পারেন, ওজন কমানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার বাছাই করাটা খুব জরুরি। আর ডায়েটে অবশ্যই ক্যালরির ঘাটতি থাকতে হবে। সে জন্য তিনি একটি ক্যালরি ট্র্যাকিং অ্যাপ ডাউনলোড করেন এবং প্রতি সপ্তাহে ১ পাউন্ড ওজন কমানোর লক্ষ স্থির করেন। তিনি বুঝতে পারেন যে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ ক্যালরির ঘাটতি তৈরি করতে পারলে সপ্তাহে তা ১ পাউন্ড ফ্যাটের সমান হবে।

ফিটনেস রুটিন

ক্যালরির ঘাটতি তৈরি করতে খাবারের তালিকা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করেছেন। নিয়মিত দ্রুত হেঁটেছেন। সপ্তাহে তিনবার ১৫ থেকে ২০ মিনিট হাই ইনটেনসিটি ইনটার্ভাল ট্রেনিং করেছেন। এটি এমন একটি শারীরিক অনুশীলনপদ্ধতি, যেখানে একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর বিরতি নিয়ে নিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য খুবই কঠোর শারীরিক ব্যায়াম করতে হয়।

যেভাবে লক্ষ্যে থাকলেন অটুট

ডায়েটের সময় চিনি, পরিশোধিত ময়দা এবং ভাজা খাবার এড়িয়ে চলেছেন। ওজন কমানোর জন্য কখনো না খেয়ে থাকেননি। বরং খিদে পেলে বাড়িতে রান্না করা খাবার খেয়েছেন। প্রচুর পানি পান করেছেন, যা তাঁকে ডিহাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। ক্যালরি পরিমাপক অ্যাপটির সাহায্যে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট এবং প্রোটিনের সঠিক ভারসাম্য জানতে পেরেছেন।

লক্ষ্য অর্জনের পর

‘ওজন কমানোর পর আমি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠি। পুষ্টিসম্পন্ন খাবার গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন এখনো ৬৩ কেজিতে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। প্রক্রিয়াটি বেশ অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল। বিশেষ করে যখন কাঙ্ক্ষিত ফল পাই, তখন অন্য রকম এক আনন্দ মনে কাজ করে,’ বলছিলেন অনঘা। আপনি যে ডায়েট কিংবা ব্যায়ামই করেন না কেন, ধারাবাহিকতা এবং অধ্যবসায়ই হচ্ছে সাফল্যের চাবিকাঠি।

ওজন কমানোর পরও অনঘা সবার উদ্দেশ্যে একটি কথা বলেন, স্থূলতা নিয়ে কাউকে কখনো কটাক্ষ করা ঠিক না। এতে স্থূল ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস কমে যায়। দৈহিক সৌন্দর্যের বাইরে তার আসল পরিচয় দেখাটাই জরুরি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া