শিশুদের শ্বাসকষ্ট কেন হয়
শীতের এই সময়ে আবহাওয়া হয়ে পড়ে শুষ্ক, ধুলাবালুও যায় বেড়ে। শ্বাসতন্ত্র সংক্রমণের নানা উপসর্গ, যেমন কাশি, সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্টে ভোগে শিশু। এসবের মধ্যে শ্বাসকষ্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা শুরু হলে দ্রুত শিশুকে চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
যেসব সাধারণ রোগে শিশুর শ্বাসকষ্ট হতে পারে
নিউমোনিয়া: এটি সব বয়সের হতে পারে। তবে পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের জন্য এটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এই রোগে তীব্র জ্বর, কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এগুলো মারাত্মক নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এতে মৃত্যুঝুঁকিও থাকে।
ব্রঙ্কিওলাইটিস: দুই বছরের নিচে শিশুদের জন্য এটি একটি সাধারণ সমস্যা। এ রোগে শিশুর নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি ও সঙ্গে মৃদু জ্বর হয়। কিছু ক্ষেত্রে রোগটি বেড়ে গেলে শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে।
শিশুর অ্যাজমা বা হাঁপানি: এটি একটি ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের জ্বর থাকে না। কিন্তু রাতে বা ভোরের দিকে কাশি শুরু হয়। যেটি দু–এক দিনের মধ্যে উপযুক্ত চিকিৎসা না পেলে তীব্র শ্বাসকষ্টে রূপ নেয়।
এ ছাড়া শিশুরা ভুল করে খেলনা, কয়েন ইত্যাদি গিলে ফেললে তা যদি শ্বাসনালিতে চলে যায় বা ওপরের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ হলে অথবা হৃদ্যন্ত্রের বৈকল্য ইত্যাদি কারণে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন শ্বাসকষ্ট হচ্ছে
১. শিশুদের শ্বাসকষ্ট হলে শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি দ্রুত হয়। দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস বলতে বোঝায়, প্রতি মিনিটে দুই মাসের নিচে শিশুর ক্ষেত্রে ৬০ বা এর বেশি, ২ মাস থেকে ১ বছরের শিশুর ৫০ বা এর বেশি, ১ বছরের পর থেকে ৪০ বা এর অধিক।
২. বুকের খাঁচা ও পাঁজরের হাড় ভেতরে ঢুকে যায়।
৩. ছোট শিশুদের নাকের পাটা ফুলে যায়।
৪. অনেক ক্ষেত্রে ঘন ঘন মাথা নাড়তে থাকে।
করণীয়
শ্বাসকষ্ট অবশ্যই একটি জরুরি অবস্থা। শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে বুঝতে পারামাত্র তাকে অতিদ্রুত কাছের হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসায় ভালো না হলে সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ভর্তি রেখে অক্সিজেন, নেবুলাইজার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা হতে পারে।
ডা. লাজিনা শারমিন, সহযোগী অধ্যাপক, ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতাল ও শিশু স্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন, মিরপুর–২, ঢাকা