সাধারণভাবে শিশুর বয়স চার বছর পূর্ণ হলে তার মলমূত্র নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্জিত হয়। এই বয়সের শিশু তখন থেকে রুটিন অভ্যাসে মল ত্যাগ করে। কিন্তু কোনো শিশু যদি চার বছর বয়স হওয়ার পরও অন্তত মাসে একবার যেখানে-সেখানে পায়খানার বেগ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, যদি মল ত্যাগ করে দেয় এবং পরপর তিন মাস এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে, তবে শিশুটি এনকোপ্রেসিস নামক অসুখে আক্রান্ত বলে বিবেচনা করা হয়। মেয়েশিশুর তুলনায় ছেলেশিশুদের মধ্যে এ রোগের হার প্রায় তিন গুণ বেশি।
এনকোপ্রেসিসকে শিশুবয়সের ভাবাবেগ ও আচরণজনিত অসুখ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
কারণ
শৌচাগারে বসে মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে না ওঠা বা সঠিকভাবে শৌচাগার ব্যবহারের প্রশিক্ষণের অভাব।
কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগা।
পায়খানা ধরে রাখতে না পারা।
মল ত্যাগ করতে গেলে ব্যথা পাওয়ার ভয়।
শৌচাগারভীতি।
মানসিক চাপজনিত কারণে পায়খানার নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারা।
উত্তেজিত অবস্থায় মলত্যাগ করে ফেলা।
চিকিৎসা
শিশুকে সতর্কতার সঙ্গে সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করে দেখতে হবে। মেরুদণ্ড বা মলাধারে এনালফিশার এবং অন্য কোনো সমস্যা আছে কি না, তার অনুসন্ধান করতে হবে। সে অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা দিতে হবে।
কোষ্ঠবদ্ধতা নিরসনে শিশুকে প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে পানি, তরল খাবার, শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়াতে হবে।
পায়খানা নরম রাখার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী লেকটুলোজ জাতীয় ওষুধের ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রয়োজনে এনেমা ব্যবহার করার দরকার হতে পারে।
এর বাইরে আরও কিছু দিক সতর্কতার সঙ্গে লক্ষ করতে হবে—
শিশু কোনোভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার কি না, তা বিবেচনায় নিতে হবে।
কোনো কারণে শিশু মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগলে তার বিহিত করতে হবে।
অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ