প্রস্রাব সংক্রমণ এড়াতে যে নিয়মগুলো নারীদের জানা থাকা উচিত
নারীদের মধ্যে প্রস্রাবে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। নারীদের বছরে দু–একবার প্রস্রাবের সংক্রমণে বা ইউরিন ইনফেকশনে ভুগতে দেখা যায়। নারীদের মূত্রনালির দৈর্ঘ্য কম বলে বাইরে থেকে সহজেই জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। ডায়াবেটিস, জরায়ুর সমস্যা বা অন্য জটিলতা থাকলে তো কথাই নেই। নারীরা অনেক সময় বাইরে গেলে প্রস্রাব চেপে রাখেন, পানি কম খান। তা ছাড়া গর্ভকালে আর মাসিক চলাকালে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। মেনোপজের পর মূত্রথলির টোন কমে যায়। সব মিলিয়ে বারবার সংক্রমিত হয়।
সংক্রমণ হলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, তলপেটে ব্যথা এবং জ্বর হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে এমন লক্ষণ দীর্ঘদিন ধরে থাকে কিংবা অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে বারবার দেখা দেয়।
সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয়
১. পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। শুধু পানি খেতে ভালো না লাগলে অন্যান্য তরল খাবার খেতে পারেন। তবে বাড়তি লবণ বা চিনিমিশ্রিত তরল কিংবা বোতলজাত বা মোড়কজাত তরল কখনোই রোজকার পানির বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। এগুলো অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
২. প্রস্রাব আটকে রাখা অনুচিত। প্রস্রাবের চাপ এলে অবশ্যই প্রস্রাব করতে হবে। আমাদের দেশের অনেক নারীই বাড়ির বাইরে প্রক্ষালন কক্ষের অব্যবস্থাপনার কথা ভেবে কিংবা সামাজিক নানাবিধ সংকোচের কারণে নিতান্ত দায়ে না পড়লে প্রস্রাব করতে যেতে চান না। অনেকে এসব ভেবে কর্মস্থলে কিংবা অন্যত্র যাওয়ার আগে পানি কম খান। এমন সংকোচ ভাঙতে হবে। সামাজিক পরিসরে নারীর জন্য স্বস্তিদায়ক প্রক্ষালন কক্ষের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে সব সময়। শৌচকর্মের পরে তো হাত ধোবেনই, শৌচকর্মের আগেও কিন্তু হাত পরিষ্কার করা উচিত।
৪. মলত্যাগের পর খুব সাবধানে শৌচকর্ম করতে হবে, যাতে মলদ্বারের দিক থেকে পানি সামনের দিকে গড়িয়ে না আসে। একইভাবে হাত বা টিস্যুপেপারও যাতে পেছন থেকে সামনের দিকে না আসে বরং সামনের দিক পরিষ্কার করে এরপর পেছনের দিক পরিষ্কার করতে হবে।
৫. বাড়ির বাইরে ভিন্ন পরিস্থিতিতে বা পানির অভাবে কেবল টিস্যুপেপার দিয়ে শৌচকর্ম করা হয়ে থাকলে পরে সুযোগ পাওয়া মাত্রই পানি দিয়ে শৌচকর্ম করে নেওয়া উচিত। ওই সময়কার পরিধেয় বস্ত্রও বদলে ফেলা উচিত।
৬. ছয় ঘণ্টার বেশি সময় একই স্যানিটারি ন্যাপকিন রাখা যাবে না। রক্তপাত কম পরিমাণে হলেও বদলে ফেলতে হবে। কাপড়ের ব্যবহার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।
পারিবারিক পরিসরে শিশু ও কিশোরীদেরও শিখিয়ে দিন পরিচ্ছন্নতার এসব নিয়মকানুন। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নিজের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে পারছেন কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন।