কেমন খাদ্যাভ্যাসে ইউরিক অ্যাসিড কমে
সন্ধিতে ব্যথার একটি কারণ গেঁটে বাত। রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে গাউট বা গেঁটে বাত হয়। পিউরিনসমৃদ্ধ খাবারের উপজাত হিসেবে ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়। বেশির ভাগ উৎপন্ন অ্যাসিড কিডনির মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু উপজাত হিসেবে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হলে রক্তে এটি অতিরিক্ত হয়ে পড়ে।
অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং বেশি ওজনের কারণে বর্তমানে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
কেন বাড়ে ইউরিক অ্যাসিড
আমিষজাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ; কোষের বিপাকক্রিয়ায় উপজাত হিসেবে ইউরিক অ্যাসিড বেশি তৈরি হয়; কিডনির রোগ; ইউরিক অ্যাসিড বিপাকের এনজাইমে ঘাটতি; স্থূলতা; নানা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া; পিউরিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া।
কী সমস্যা হয়
অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডে অস্থিসন্ধির চারপাশে ব্যথা অনুভূত হয়। অনিয়ন্ত্রিত ইউরিক অ্যাসিড থাকলে হার্টের অসুখ ও কিডনিতে পাথর হতে পারে। বিশেষ করে পায়ের অস্থিসন্ধিগুলো লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে। গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে।
যেসব খাবারে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে
● সব ধরনের লাল মাংস খেলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। কলিজা, গুর্দা, মগজ, পায়া, ভুঁড়ি, মাছের ডিম, সামুদ্রিক মাছ, গরু-খাসির মাংস, হাঁস বা ভেড়ার মাংস, ফুসফুস, মাশরুম, হাঁস-মুরগির চামড়া, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শুঁটকি, ইলিশ মাছে ইউরিক অ্যাসিড বেশি বাড়ে।
● মটর ডাল, বুটের ডাল, চটপটির ডাল, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি।
● শতমূলী, পুঁইশাক, পালংশাক, শর্ষেশাক, মুলাশাক, পাটশাক, কচুশাক, কচুর লতি।
● ক্রুসিফেরি গোত্রের উদ্ভিদ, যেমন ফুলকপি, ব্রকলি, ঢেঁড়স, ওলকপি, টমেটো, শজনে, শালগম, মাশরুম, বেগুন।
● অতিরিক্ত লবণযুক্ত (প্যাকেটজাত খাবার), চর্বিযুক্ত ও তেলে ভাজা খাবার, ইস্ট বা ইস্টের খাবার।
কী খাবেন
● প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পরিমিত মিঠা পানির মাছ এবং চামড়া ছাড়া মুরগির মাংস, ডিম, মুগডাল, মসুর ডাল, টক দই, দুধ খেতে হবে।
● শাকসবজি, লালশাক, ডাঁটাশাক, লাউশাক, কলমিশাক, কুমড়াশাক, সবুজ শাক। কাঁকরোল, পেঁপে, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, পটোল, করলা, লাউ, চালকুমড়া।
এ ছাড়া পর্যাপ্ত মৌসুমি ফল খেতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। পানি অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডকে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন–টি ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। এক গ্লাস পানিতে এক ইঞ্চি আকারের দুই টুকরা দারুচিনি এবং চার-পাঁচটা তেজপাতা দিয়ে খুব ভালো করে কয়েক মিনিট ফুটিয়ে ওই পানি পান করলেও ইউরিক অ্যাসিড কমে।
মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম, ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল