শীতকালে শরীরে রোদ না লাগিয়ে ত্বকের ক্ষতি করছেন না তো

শীতের সকালের মিষ্টি রোদ শরীরে লাগানো জরুরি
ছবি: হাসান মাহমুদ

শীতকালে প্রায় সবারই ত্বক হারিয়ে ফেলে আর্দ্রতা। হয়ে ওঠে শুষ্ক ও খসখসে। অনেকের ধারণা, শীতকালে রোদের তাপের সংস্পর্শে গেলে ত্বক আরও রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বকের মধ্যে কালচে ভাব চলে আসে। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। রোদে আলট্রা ভায়োলেট রশ্মির পরিমাণ বেশি থাকলেও শীতের সকালের মিষ্টি রোদে এর পরিমাণ থাকে খুব কম। শীতকালের সকালের রোদ সব বয়সী মানুষের জন্য ভীষণ উপকারী।

শীতকালে দীর্ঘদিন রৌদ্রের তাপে যেতে না পারলে ত্বকে তৈরি হয় পুষ্টিহীনতা। খুব দ্রুত উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে ত্বক। আমাদের ত্বকের নিচে রয়েছে অসংখ্য স্নায়ু। রৌদ্রের তাপ আমাদের ত্বকের স্নায়ুগুলোকে কর্মতৎপর রাখে। ত্বকের জন্য ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি, সি, ডি, বিভিন্ন ধরনের খনিজ লবণ এবং পানি ভীষণ জরুরি। আর ক্যালসিয়ামকেও সঠিকভাবে কাজ করতে ভূমিকা রাখে ভিটামিন ডি। শীতকালের সূর্যের তাপের অভাব হলে ত্বকের ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম ত্বকের জন্য ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। শীতকালে ঠান্ডার ভয়ে বাসার মধ্যে থাকা হয় বেশি। আবার কাজের জায়গায়ও আমাদের অধিকাংশ সময় রৌদ্রের তাপ ছাড়া কাজ করতে হয়। অধিকাংশ কর্মস্থলে সব সময় এসি চালিয়ে রাখতে হয়। রৌদ্রের তাপ আসার সুযোগ থাকে না। এ ধরনের পরিবেশে ত্বকে খুব দ্রুত রোগজীবাণুর আক্রমণ হয়। তাই শীতকালে সূর্যের তাপে নিয়মিত যাওয়াটা জরুরি। নবজাতকের জন্য শীতকালের রোদ যথেষ্ট উপকারী।

দীর্ঘদিন রোদের তাপের অভাবে ত্বকের কোষগুলো দুর্বল হয়ে যায়। তখন হঠাৎ একদিন রোদের তাপ লাগলে ত্বক খুব বেশি কালচে হয়ে ওঠে। শীতকালে ঠান্ডাজনিত কারণে চোখের পাতা, ভ্রুতেও অণুজীবের সংক্রমণ হতে পারে। শীতকালে রৌদ্রের অভাবে ঠোঁটের কোণে ঘা, ঠোঁট ফেটে যাওয়া, হাতের আঙুলের চামড়া ওঠা, নখ ভেঙে যাওয়া, পায়ের গোড়ালি ফেটে ঘা হতে পারে। তখন আমাদের সারা শরীরে জ্বর জ্বর ভাব, মাথাব্যথা, জিহ্বাতে ঘা, চুল ঝরে যাওয়া, হাত–পায়ের হাড়ের মধ্যে ব্যথা হয়ে থাকে। অনেকের আবার মাথার ত্বকে খুশকির মোটা আবরণ তৈরি হতে পারে। শীতকালে রৌদ্রের অভাবে অনেকের ভ্রুতেও খুশকি হয়। অনেকের ভ্রুর চুল ঝরতে দেখা যায়। শীতকালে তাই দরকার বাড়তি পরিচর্যা। এ সময় প্রচুর শাকসবজি খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। এবং সকাল ১০টা থেকে ১১টার সময়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রৌদ্রে থাকতে হবে। সকালে সুযোগ না পেলে যখনই সময় হবে, তখনই রৌদ্রে যেতে হবে। আর যাঁদের নিয়মিত অতিমাত্রায় রৌদ্রে যেতে হয়, তাঁরা সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে বাসার বাইরে যাবেন। এতে ত্বকের কালচে ভাব কমবে।

আরও পড়ুন