শিশুর জন্মগত ছানি 

চোখের ছানি পড়াকে আমরা সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের সমস্যা বলে মনে করি। অথচ জন্মের সময়ও এ সমস্যা নিয়ে শিশু জন্মাতে পারে। দেশে প্রতি ১০ হাজারে ৫ থেকে ৭টি শিশু জন্মগত ছানি নিয়ে জন্ম নেয়।

ধরন

● শিশুর জন্মগত ছানি

● একটু বয়স হলে শিশুর চোখে নানা কারণে ছানি

● যেকোনো রোগের প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট ছানি

● আঘাতজনিত ছানি 

শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় ছানি নিয়ে জন্মালে বা মায়ের গর্ভে থাকার সময়ই যদি ছানি আসে, তবে তা জন্মগত ছানি। আবার জন্মের পর দুই থেকে চার বছর বয়সের মধ্যে নানা কারণে শিশুর চোখে ছানি আসতে পারে। চোখের কোনো প্রদাহজনিত রোগ বা যেকোনো হালকা বা গুরুতর আঘাতে শিশুর এক বা দুই চোখে ছানি পড়তে পারে।

লক্ষণ

● চোখের কালো অংশের ভেতর যে ছোট্ট গোলাকার অক্ষিতারা থাকা, সেটির পেছনে সাদা পাথরের মতো কিছু দেখা যাবে। দিনে সামান্য ও রাতে বেশি বোঝা যায়। 

● রোগীর চোখ ট্যারা কিংবা চোখ কাঁপা বা ঝাঁকুনি দিয়ে কাঁপতে দেখা যায়। 

● শিশু কারও মুখের দিকে ঠিকমতো তাকায় না বা সামনে কিছু গেলে ধরতে চাইলেও ঠিকভাবে ধরতে পারে না। 

কারণ

● অন্তঃসত্ত্বা মায়ের কিছু ভাইরাসজনিত রোগ, যেমন রুবেলা (এক বিশেষ ধরনের হাম), সাইটোমেগালো ভাইরাস বা টক্সোপ্লাজমোসিস রোগের জন্য গর্ভস্থ সন্তানের ছানি হতে পারে। 

● মায়ের বংশগতভাবে ছানি, যা মা–বাবার কাছ থেকে জিনগত মিউটিশনের কারণে ঘটে।

● কিছু মেটাবলিক ব্যাধি, যেমন গ্যালাকটোসেমিয়ার জন্য জন্মগত ছানি পড়ে। 

● অন্তঃসত্ত্বাকালে না বুঝে কিছু ওষুধ, বিশেষ করে স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ ব্যবহার।

● মায়ের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস কিংবা ক্রোমোজোমাল অস্বাভাবিকতা। 

করণীয়

অস্ত্রোপচার ছাড়া ছানি রোগের চিকিৎসার বিকল্প নেই। কখন অস্ত্রোপচার করতে হবে, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। অস্ত্রোপচার দুভাবে করা যেতে পারে। যেমন নবজাতকের এক বছর বয়সের মধ্যেই ঘোলা লেন্স অপসারণ ও পরবর্তী সময়ে দুই থেকে চার বছর বয়সের মধ্যে চোখে লেন্স সংযোজন করা। অনেক চিকিৎসক একবারেই ছানি অস্ত্রোপচার ও লেন্স সংযোজন করে থাকেন। সেটি অবশ্যই দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে হতে হবে। শিশুকে অচেতন করে খুব সহজেই এটি করা সম্ভব। এ বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতা বা অস্ত্রোপচার এড়ানোর অবকাশ নেই।


অধ্যাপক ডা. সৈয়দ এ কে আজাদ, চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন, বিভাগীয় প্রধান, আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা