জামের বীজ কি আসলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে?
এ বছরের মতো জামের মৌসুম শেষ। গ্রীষ্মের শেষের দিকে খুব কম সময়ের জন্য জামের ফলন হয়। দাম মোটামুটি নাগালের মধ্যে হওয়ায় এই ফল কিনে খেতে পারেন সবাই। সাধারণত জাম খাওয়ার পর বীজগুলো ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু এই দৃশ্য দেখলে হয়তো অবাক হবেন যে কারওয়ান বাজারের ফলের আড়তে ফল বিক্রেতারা ভালো জাম থেকে বীজ আলাদা করে নিচ্ছেন সেগুলো কেজি দরে বিক্রি করার জন্য।
অদ্ভুত এই দৃশ্য দেখলে যে কেউ ভাবতে পারেন যে ভালো জামগুলো কেন নষ্ট করা হচ্ছে? উত্তর দিলেন জাম বিক্রেতা সানোয়ার হোসেন। বলেন, ‘ওষুধ তৈরির জন্য জামের বীজ কিনে নেয় ওষুধ কোম্পানি আর বাকিটা যায় বিভিন্ন জুসের দোকানে। পুরোটাই লাভ।’
অনেকেই মনে করেন, জামের বীজ রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে জাম খাওয়ার পর জামের বীজগুলো ফেলে না দিয়ে সেগুলো গুঁড়া করে খেয়ে ফেলেন। কিন্তু সত্যিই কি এর কোনো স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আছে? আর কতটুকুই-বা খেতে হবে?
এশিয়া প্যাসিফিক জার্নাল অব ট্রপিক্যাল বায়োমেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় একটি হাইপারগ্লাইসেমিক; অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ খুব বেশি, এমন একটি ইঁদুরের শরীরে জামের বীজ প্রয়োগ করে পরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষায় জামের বীজ ইঁদুরটির রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে এনে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
কিন্তু মানুষের শরীরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কী পরিমাণ জামের বীজের গুঁড়া খেতে হবে, তা এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণাই প্রমাণ করতে পারেনি বলে জানান বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ। বলেন, ‘জামের বীজে কোনো প্রকার শর্করা নেই বললেই চলে। এ ছাড়া চিনির পরিমাণও কম। তাই অনেকেই মনে করেন, এটি ডায়াবেটিসের জন্য ভালো। কিন্তু জেনে রাখা ভালো যে এতে তুলনামূলক বেশি আমিষ ও ফাইবার আছে। তাই না জেনেবুঝে খাওয়ার সময় সাবধান হওয়া প্রয়োজন এবং খেলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া ভালো।’