অতিরিক্ত ঘাম হলে কী করবেন?
ঘাম ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি থেকে নিঃসরিত হয়। বিরক্তিকর ব্যাপার হলেও ঘামের কিন্তু অনেক উপকারিতা। শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়, নিয়ন্ত্রণে রাখে শরীরের তাপমাত্রা। প্রচণ্ড গরমে শরীর ত্বকের ঘামের মাধ্যমে তাপ ছেড়ে দিয়ে শরীরকে ঠান্ডা রাখে। তাই ঘাম হওয়া খারাপ নয়। শরীরকে শীতল করে ঘাম। বরং প্রচণ্ড গরমে ঘামশূন্য শরীর দেখলে বুঝতে হবে হিট স্ট্রোক হতে যাচ্ছে। তবে ঘামের কারণে কোনো শারীরিক সমস্যা যেন না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
অনেক সময় অতিরিক্ত ঘামের কারণে ঘর্মগ্রন্থির নালি বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্ট হয় মিলিয়ারিয়া, যাকে আমরা ঘামাচি বলি। ঘামাচি আবার বিভিন্ন রকম। কোনো ঘামাচিতে চুলকানি বেশি হয়, আবার কোনোটাতে কম। কোনোটা লালচে হয়, কোনোটা আবার দেখতে সাদা। অনেক সময় ঘামাচির সঙ্গে সংক্রমণও থাকতে পারে।
শরীরের ভাঁজ হওয়া অংশে অতিরিক্ত ঘামের কারণে দাদ বা দাউদ, ইনটারট্রিগো হয়।
অনেকের বিশেষ বিশেষ জায়গা, যেমন হাতের তালু, পায়ের তালু বেশি ঘামে। আবার অনেকের ঘামে দুর্গন্ধ হয়।
অনেক সময় শরীরে লাল লাল চাকা, সঙ্গে চুলকানি দেখা যায়। এটা একধরনের আরটিকারিয়া।
বেশি ঘামার কারণে ঠান্ডা লেগে সর্দি, জ্বর, গলাব্যথা হয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
প্রচণ্ড গরমে ঘামতে ঘামতে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা হতে পারে। শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে লবণপানি বের হয়ে যাওয়ার কারণে রক্তে লবণের তারতম্য দেখা দেয়, যাকে বলে ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স। এর ফলে শারীরিক দুর্বলতা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, এমনকি অজ্ঞান হতে দেখা যায়।
কী করবেন
প্রচুর পরিমাণে পানি, তরল ও শরবত পান করুন। ছোট শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবেন। রুম যথাসম্ভব ঠান্ডা বা শীতল রাখার চেষ্টা করুন। হালকা রঙের সুতি, পাতলা কাপড় পরিধান করুন। জামাকাপড় ঘেমে ভিজে গেলে পাল্টে ফেলুন। বাইরে থেকে এসে অবশ্যই কাপড় পাল্টে ফেলুন। একই কাপড় এই গরমে দুবার পরা উচিত নয়। অন্তর্বাস অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। শিশুদের গা মুছিয়ে দিন একটু পরপর, যাতে ঘাম বসে না যায়। ঘামাচি বা অন্য কোনো ত্বকের সমস্যায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন।