নিয়মিত প্রসূতিসেবা কীভাবে নেবেন

গর্ভাবস্থা কোনো রোগ নয়। এটি নারীর জীবনের একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন। মাতৃত্বের স্বাদ পেতে নারীকে এ অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু কখনো কখনো এ যাত্রা দুর্গম হয়ে ওঠে।

প্রসূতি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হলে মায়ের প্রসব নিরাপদ হয়, মাতৃমৃত্যুর হার কমে। একজন গর্ভবতী মায়ের কীভাবে সঠিক প্রসূতিসেবা নেওয়া উচিত এবং গর্ভাবস্থায় কী কী বিপদচিহ্ন সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে, তা জানার চেষ্টা করা যাক।

প্রসূতিসেবা কী

একজন গর্ভবতী নারীর শুরু থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত পরিকল্পিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকে প্রসূতিসেবা বা অ্যান্টেনেটাল চেকআপ বলা হয়।

কখন ও কতবার দরকার

একজন নারী তাঁর গর্ভাবস্থা নিশ্চিত হওয়ার পর অথবা মাসিক বন্ধের দুই মাসের মধ্যে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করবেন। এই চেকআপ দরকার সাধারণত এক মাস পর পর সাত মাস পর্যন্ত। সাত মাসে পড়লে দুই সপ্তাহ পরপর ৯ মাস পর্যন্ত চেকআপ করাতে হবে। এরপর এক সপ্তাহ পরপর প্রসব পর্যন্ত এই সেবা দেওয়া হয়। যদি নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সুযোগ না থাকে ও ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা না হয়, সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম চারবার চিকিৎসকের কাছে চেকআপে যেতে হবে।

  • প্রথমবার ৪ মাসের মধ্যে

  • দ্বিতীয়বার ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে

  • তৃতীয়বার অষ্টম মাসে

  • চতুর্থবার নবম মাসে

কেন নিয়মিত চেকআপ

নিয়মিত প্রসূতিসেবা নিয়ে আমরা গর্ভকালীন জটিলতা ও প্রসবজনিত বিপদগুলো এড়িয়ে চলতে পারি। জটিলতা ছাড়া একজন মা সুস্থ ও সুন্দরভাবে সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারেন।

গর্ভকালীন বিপদচিহ্ন

প্রসূতিকালীন সেবা দেওয়ার সময় মাকে ও তাঁর পরিবারকে গর্ভকালীন বিপদচিহ্নগুলো সম্বন্ধে ধারণা দিতে হবে। যেমন—

  • প্রসব–পূর্ববর্তী ও প্রসব–পরবর্তী রক্তক্ষরণ

  • চোখে ঝাপসা দেখা অথবা তীব্র মাথাব্যথা

  • প্রসবের আগে ও পরে খিঁচুনি

  • গর্ভাবস্থায় অথবা প্রসবের পর তীব্র জ্বর ও দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব

  • বিলম্বিত প্রসব অর্থাৎ ১২ ঘণ্টার বেশি প্রসবব্যথা ও প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গ বের হয়ে আসা

এ চিহ্নগুলো দেখা গেলে যত দ্রুত সম্ভব আশপাশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

ডা. নূরুন নাহার, অবস ও গাইনি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল