ডার্ক সার্কেল কেন হয়, প্রতিরোধে কী করবেন

ডার্ক সার্কেল দেখা দিতে পারে যেকোনো বয়সেছবি: সংগৃহীত

জীবনে ব্যস্ততা যেমন বাড়ছে, তেমনই স্ট্রেসের (চাপ) মাত্রাও বাড়ছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিদ্রাহীনতা। এ সবকিছুর যোগফল চোখের চারদিকে ডার্ক সার্কেল বা কালো দাগ। বিশেষ করে চোখের নিচের এ কালো দাগ নিয়ে অনেকেই বিড়ম্বনায় ভোগেন, করেন সংকোচবোধও। স্বাস্থ্যকর ও চিন্তামুক্ত জীবনযাপনে ডার্ক সার্কেল প্রতিরোধ করা যায়।

কেন হয়

  • চোখের চারদিকের অতি সূক্ষ্ম রক্তনালি সরু হয়ে যাওয়া ও কোলাজেন টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এ সমস্যার মূল কারণ।

  • কম ঘুম বা মাত্রাতিরিক্ত ঘুমেও এমনটা হতে পারে।

  • পানিশূন্যতা, রক্তশূন্যতা, হরমোনজনিত সমস্যা (থাইরয়েড), চোখের কিছু ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার, দীর্ঘদিনের এলার্জি, বংশপরম্পরা বা জিনগত কারণ।

যেকোনো বয়সেই ডার্ক সার্কেল দেখা দিতে পারে। বার্ধক্যে মুখের ফ্যাট ও কোলাজেন টিস্যু কমে যাওয়ায় বেশির ভাগ মানুষের এ সময় ডার্ক সার্কেল বেশি হয়।

চিকিৎসা

  • রেটিনয়েড ক্রিম ব্যবহার করা যায়। এটি চোখের নিচের ত্বক সুস্থ রাখে ও কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। পিগমেন্টেশন কমাতেও সাহায্য করে এটি।

  • লাইটেনিং এজেন্ট, যেমন হাইড্রোকুইনোন, কোজিক অ্যাসিড বা ভিটামিন সি-এর মতো উপাদান ধারণকারী টপিক্যাল এজেন্টগুলো হাইপারপিগমেন্টেড জায়গাগুলো হালকা করে ডার্ক সার্কেল কমায়।

  • হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের মতো ইনজেকশনযোগ্য ফিলারগুলো চোখের নিচের অংশের ফাঁপা ভাব বা ভলিউম কমায়।

  • আইপিএল থেরাপি রক্তনালি ও পিগমেন্টেশন কমায় এবং চোখের নিচে লাল ভাব, ডার্ক সার্কেল দূর করে।

  • লেজার চিকিৎসা কোলাজেন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করতে পারে, ত্বকের গঠন উন্নত করে ও পিগমেন্টেশন কমায়।

  • প্লাজমা থেরাপিতে রোগীর রক্তের সামান্য নিয়ে প্লাটিলেটকে ঘনীভূত করে চোখের নিচের অংশে পিআরপি ইনজেকশন দেওয়া হয়।

  • চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টিহিস্টামাইন বা টপিক্যাল স্টেরয়েডের মতো ওষুধ দিতে পারেন ডার্ক সার্কেল প্রতিকারে।

প্রতিরোধ

  • জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ডার্ক সার্কেল কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম, হালকা শারীরিক ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাসে প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল রাখা জরুরি।

  • ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিতে যত্ন নিতে পারেন, যেমন চোখের চারদিকে ঠান্ডা সেক নেওয়া, নিয়মিত ম্যাসাজ, ঠান্ডা আলু বা শসার প্যাক ব্যবহার করা।

  • দিনে তিন থেকে চার লিটার পানি পান করতে হবে।

  • বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক করা, হরমোন সমস্যার সমাধান করা এবং কিছু মলম যেমন হাইড্রোকুইনন, গ্লাইকোকোলিক অ্যাসিডের ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়।

ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, ত্বক-চর্ম-যৌন ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা