পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) একটি বিপাকজনিত সমস্যা। এতে ওজন বেড়ে যাওয়া, হরমোনের তারতম্য, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সসহ নানা ধরনের মেটাবলিক বা বিপাকীয় সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ সমস্যায় খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।
ওজন নিয়ন্ত্রিত হলে ঋতুস্রাবও ধীরে ধীরে নিয়মিত হয়ে যাবে ও হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা অনেকটাই কমে যাবে। আবার ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকার কারণে নির্দিষ্ট ডায়েট মেনে চলা উচিত।
কোন ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা ভালো, তার একটি স্পষ্ট ধারণা হয়ে গেলে নিজেই ডায়েট পরিকল্পনা করতে পারবেন।
পিসিওএস থাকলে হাই ফাইবার, লো-কার্ব ডায়েট মেনে চলতে হবে। ভাত-রুটি, ময়দার তৈরি খাবারের মতো শর্করা কম খেতে হবে। শাকসবজি, ডাল, বীজ—এগুলো বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন।
মাটির তলার সবজি, যেমন আলু, শাঁখআলু, গাজর, বিট একটু কম খাওয়াই ভালো।
ফল খেতে পারবেন। তবে আম, কলা, লিচু, আঙুর—এসব ফলে কার্বোহাইড্রেট বেশি, তাই পরিমিত খেতে হবে।
ভাজাপোড়া, জাঙ্ক ফুড, প্রসেস করা খাবার, যেমন কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, পাউরুটি, বার্গার, সসেজ ডায়েট থেকে বাদ রাখতে হবে।
মিষ্টি, আইসক্রিম, বোতলের ঠান্ডা পানীয় যত কম খাওয়া যায়, তত ভালো।
রেড মিটের বদলে চিকেন বা মাছ খান।
ডিম রোজ চলতে পারে। ডাল খেতে পারেন।
নানা রকম বীজ খাওয়া যেতে পারে, যেমন চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড, কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি।
হাই ফাইবারযুক্ত সবজি, যেমন ফুলকপি, ব্রকলি, লেটুসপাতা, কুমড়া, বিন ইত্যাদি ডায়েটে রাখুন।
কাঠবাদাম, আখরোট, যেকোনো ধরনের বেরি, শসা, টমেটো, আপেল, নানা রকম লেবু খেতে পারেন।
রান্নায় অলিভ অয়েল বা যেকোনো খাঁটি তেল ব্যবহার করতে পারেন।
মাঝেমধ্যে চকলেটের বদলে ডার্ক চকলেট এক টুকরা করে চলতে পারে।
স্যাচুরেটেড ফ্যাটের বদলে গুড ফ্যাট বেছে নিন।
পিনাট বাটার বা আমন্ড বাটারের মতো বাদাম থেকে তৈরি মাখন ব্যবহার করতে পারেন পাউরুটিতে।
মনে রাখুন
পিসিওএসের রোগীদের হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাই একে অবহেলা করা যাবে না।
পিসিওএসের চিকিৎসার একটি বড় অংশ হলো ওজন নিয়ন্ত্রণ আর খাদ্যাভ্যাস। তাই এদিকে বেশি জোর দিতে হবে।
ডা. শারমিন আব্বাসী, সহযোগী অধ্যাপক, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল