স্রাবের যে সমস্যায় বিব্রত নারীরা
লিউকোরিয়া হলো ভ্যাজাইনাল বা যৌনাঙ্গ থেকে বের হওয়া সাদা বা হলদে রঙের স্রাব। এটি মাসিকের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিমাণে হয়ে থাকে। এটি যৌনাঙ্গের সব জীবাণু দূর করতে সহায়তা করে। আবার ছত্রাকের সংক্রমণ বা যৌনসংগমঘটিত সংক্রামক রোগের কারণেও এটি নিঃসৃত হতে পারে। তাই আগে বুঝতে হবে, এটি সাধারণ সাদা স্রাব নাকি অন্য কোনো রোগের কারণ। পরিমাণে অত্যধিক হলে, রং পরিবর্তন হলে এবং সাধারণ জীবনযাপনে সমস্যা তৈরি করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
কেন হয়
অনিরাপদ যৌনসংগম, পুষ্টির ঘাটতি, যৌনাঙ্গের আশপাশের জায়গার অপরিচ্ছন্নতা, গর্ভাবস্থায় যৌনাঙ্গের কোথাও আঘাত পেলে বা প্রস্রাবে সংক্রমণ হলে এমন হতে পারে। এ ছাড়া যৌনাঙ্গে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ এর অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্টেরয়েড ব্যবহার, জন্মনিরোধক পিল গ্রহণ এর ঝুঁকি বাড়ায়। অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতাও এর কারণ হতে পারে। এর কারণে যে সমস্যাগুলো হয় তা হলো—ব্যথা, দুর্গন্ধ, চুলকানি, জ্বালাপোড়া।
প্রতিকার
১. যৌনাঙ্গ সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। এই জায়গায় সুগন্ধি সাবান বা পারফিউম ব্যবহার করা উচিত নয়। কুসুম গরম পানি এবং মৃদু পিএইচসম্পন্ন সাবান দিয়ে জায়গাটি ধোয়া উচিত। তবে মনে রাখবেন সাবান কখনোই সরাসরি যৌনাঙ্গের ভেতরে ব্যবহার করা যাবে না।
২. পানি এবং আপেল সিডার ভিনেগার সমপরিমাণে মিশিয়ে দিনে একবার বা দুবার ধুতে পারেন। ভিনেগার না পেলে তাজা লেবুর রস এবং পানির মিশ্রণ পরিষ্কারক হিসেবে ভালো।
৩. একই প্যাড ছয় ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই প্যাড পরিবর্তন করতে হবে।
৪. সব সময় ঢিলেঢালা সুতির অন্তর্বাস ব্যবহার করা উচিত। কারণ, সিনথেটিক কাপড় কম শোষণ ক্ষমতাসম্পন্ন।
৫. প্রচুর পানি পান করতে হবে। যথেষ্ট টাটকা ফলমূল, সবজি এবং অন্যান্য খাবার খাওয়া উচিত। জটিল শর্করা (গমের রুটি, বাদামি চাল), আমিষ (মাছ, মাংস, ডিম, দুধ) এসব উপাদান গ্রহণ করবেন। প্রক্রিয়াজাত খাবার ও প্রক্রিয়া করা চিনি খাওয়া ছাড়তে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি লিউকোরিয়া বাড়ায়।
৬. নিয়মিত ঘুম এবং ব্যায়াম করুন।
৭. প্রতিবার প্রস্রাবের পর জায়গাটা ভালোভাবে ধুতে হবে। পরে টয়লেট পেপার ব্যবহার করে শুকিয়ে নিতে হবে। সব সময় সাদা টয়লেট টিস্যু ব্যবহার করতে হবে এবং মুছতে হবে সামনে থেকে পেছন দিকে। স্থানটি ভেজা রাখা যাবে না।
৮. যৌনসংগমের সময় রোগ প্রতিরোধের জন্য কনডম ব্যবহার করা উচিত।
৯. ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।