তরুণদেরও হতে পারে কলোরেক্টাল ক্যানসার

অনেকেরই ধারণা, বয়স্কদেরই কেবল অন্ত্রের ক্যানসার হয়। তবে বর্তমানে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী বা তরুণদের মধ্যেও কোলন ও রেক্টাম ক্যানসারের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের কোলন ও রেক্টাম ক্যানসারের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি। পারিবারিক ক্যানসার ও পলিপের ইতিহাস, আইবিডি (ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ) ও জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন এই ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে দেয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, ২০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের ঝুঁকির মাত্রা দ্রুত বাড়ছে।

কারণ

  • অল্প বয়সে কলোরেক্টাল ক্যানসারের অন্যতম কারণ জেনেটিক ও পারিবারিক ক্যানসারের ইতিহাস। কিন্তু জীবনযাত্রার মান ব্যাপক প্রভাব ফেলছে এই ক্ষেত্রে। এতে অল্প বয়সীদের মধ্যে ভবিষ্যতে ক্যানসারের প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন।

  • যেসব ঝুঁকির কারণে কলোরেক্টাল ক্যানসার অল্প বয়সীদের মধ্যে বাড়ছে, সেগুলো হলো কায়িক পরিশ্রমের অভাব, কম আঁশযুক্ত ও অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া, তাজা ফলমূল ও শাকসবজি কম খাওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকা, ধূমপান, অ্যালকোহল, আইবিডি ইত্যাদি।

উপসর্গ

  • যে ধরনের উপসর্গ কলোরেক্টাল ক্যানসারের সন্দেহ সৃষ্টি করে, সেগুলো হচ্ছে মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া বা কালো পায়খানা, আমযুক্ত পায়খানা, পেট ব্যথা, মলের অভ্যাসের আকস্মিক পরিবর্তন, কোষ্ঠকাঠিন্য, ওজন কমে যাওয়া, ক্ষুধামান্দ্য বা অরুচি, দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি।

  • কারও যদি উপরিউক্ত লক্ষণগুলো থেকে থাকে, তাকে অবশ্যই দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং চিকিৎসা নিতে হবে।

  • প্রাথমিক পর্যায়ে এই ক্যানসার ধরা পড়লে চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যায়।

প্রতিকার

জীবনযাপন সম্পর্কে সচেতনতা হতে পারে তরুণদের ক্যানসার প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে।

  • অধিক আঁশযুক্ত খাবার, ফলমূল, সবজি ইত্যাদি বেশি খেতে হবে।

  • প্রক্রিয়াজাত মাংস ও চর্বি পরিহার করতে হবে।

  • পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।

  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

  • ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করতে হবে।

  • যাঁরা অধিক ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাঁদের নিয়মিত স্ক্রিনিং করতে হবে।

ডা. কৃষ্ণপদ সাহা, বিভাগীয় প্রধান, সার্জারি বিভাগ, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল