এসব নিয়ম মেনে চলার পরও অতিরিক্ত ঘামছেন?
ঘাম হওয়া মানুষের দেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ঘামের মাধ্যমে শরীর অতিরিক্ত তাপ, বর্জ্য পদার্থ বের করে দিয়ে শরীরকে রাখে শীতল ও পরিশুদ্ধ। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে নানা রকম সমস্যা হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘামের কারণ
১. পরিবেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে বাইরের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করে শরীর।
২. থাইরয়েড হরমোনের সমস্যার কারণে অতিরিক্ত ঘাম হয়।
৩. শারীরিক পরিশ্রম, রাগ, উত্তেজনা বা দুশ্চিন্তার কারণে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া স্বাভাবিক।
ঘাম নিয়ন্ত্রণে খাবার
১. অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীর থেকে প্রচুর পানির সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় লবণও বের হয়ে যায়। তাই সবার আগে যথেষ্ট পানি পান করতে হবে (দিনে ৩-৪ লিটার অথবা ১২-১৬ গ্লাস)। শরবত, গ্লুকোজ, ওরস্যালাইন পান করা এ ক্ষেত্রে বেশ উপকারী; কারণ, ওরস্যালাইনে পরিমিত লবণ মিশ্রিত থাকে। আর বাইরের গরম থেকে ঘরে ফিরে বা ব্যায়াম থেকে ফিরে হঠাৎ ঠান্ডা পানি না খেয়ে ওরস্যালাইন খাওয়াই ভালো। তবে কিডনি রোগে ভুগছেন এবং ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন যাঁরা, তাঁরা প্রতিদিনের নির্ধারিত পানির পরিমাণ আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে অবশ্যই জেনে নিতে ভুলবেন না।
২. অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার, মাত্রাতিরিক্ত চা-কফি একেবারেই খাওয়া যাবে না।
৩. ধূমপানে এবং অ্যালকোহলে স্বাভাবিকের চেয়ে শরীর ঘামে বেশি। তাই এগুলো পরিহার করতে হবে।
ঘাম প্রতিকারে আরও যা জানতে হবে
ঘাম সম্পূর্ণভাবে প্রতিকার করা সম্ভব নয়। তবে কিছু পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
১. শরীর পরিষ্কার রাখতে নিয়মিত গোসল।
২. ঘামরোধী প্রসাধনী ব্যবহার।
৩. বাতাস চলাচল করে এমন জুতা পরা।
৪. আর্দ্রতা শুষে নেয় এমন মোজা পরা।
৫. ট্যালকম পাউডার ব্যবহার।
৬. নাইলন ও পলিয়েস্টার কাপড়ের পোশাক না পরে সহজেই ঘাম শুষে নেয়, এমন কাপড় যেমন সুতির তৈরি ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে।
চিকিৎসা
ওপরের পরামর্শগুলো নিয়মিত মেনে চলার পরও যদি অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকে, তাহলে একজন হরমোনবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো জরুরি। কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এগুলো থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা বা নিউরোলজিক্যাল সমস্যার জন্যই হয়ে থাকে।
ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ কমে গেলেও ঘাম হবে, সে ক্ষেত্রে রোগীর অন্যান্য বিষয়ের প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে।
ডা. হিমেল বিশ্বাস: আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, নিউরোমেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, পান্থপথ, ঢাকা।