লাইপোসাকশনে কি আসলেই ওজন কমে
বেশির ভাগ মানুষই অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকেন। সুস্থ থাকার পাশাপাশি আকর্ষণীয় ফিগার ধরে রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও করেন। তবে অনেক সময় ডায়েট ও পর্যাপ্ত শরীরচর্চা করার পরও দেহের বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত চর্বি জমে থাকে। এই চর্বি কমাতে অনেকেই লাইপোসাকশনের শরণাপন্ন হন। কিন্তু এটি কি আদৌ মেদ কমায়?
লাইপোসাকশন কী
লাইপোসাকশন একধরনের অস্ত্রোপচার। এর মাধ্যমে শরীরের যেসব অংশে চর্বি বেশি জমে (যেমন পেট, ঊরু, পিঠ, নিতম্ব, বাহু, ঘাড়, চিবুক), সেসব স্থান থেকে অতিরিক্ত চর্বি দূর করা হয়।
উদ্দেশ্য
সাধারণত কসমেটিক পারপাস বা ফিগারকে আকর্ষণীয় করতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। তবে কিছু চিকিৎসাতেও এর ব্যবহার আছে। যেমন লাইপোমা অপসারণ, ছেলেদের বুকে চর্বি জমলে বা গাইনোকোমাস্টিয়া হলে, লাইপোডিস্ট্রফি বা চর্বির অসম বণ্টন হলেও লাইপোসাকশন কার্যকর।
কীভাবে করা হয়
প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসকেরা এই অস্ত্রোপচার করে থাকেন। যে জায়গায় করা হয়, সেখানে একটি লম্বা ক্যানুলা প্রবেশ করিয়ে স্যালাইন–জাতীয় তরল প্রবেশ করিয়ে চর্বিকে গলিয়ে ফেলা হয়। এরপর মেশিনের মাধ্যমে চর্বিগুলো শরীর থেকে বের করা হয়। লেজার মেশিন ও আলট্রাসাউন্ড মেশিন—দুভাবেই এটি করা যায়।
কারা করতে পারবেন
যাঁদের ওজন স্বাভাবিক, কিন্তু রিজওনাল ফ্যাট বা নির্দিষ্ট জায়গায় চর্বি বেশি, তাঁরা এ পদ্ধতির জন্য উপযুক্ত। কিন্তু যাঁদের ওজন বেশি বা স্থূলতায় ভুগছেন, তাঁরা স্রেফ ওজন কমানোর জন্য লাইপোসাকশন করে লাভ হবে না, অর্থাৎ ওজন কমবে না।
ঝুঁকি
যেহেতু এটি একটি অস্ত্রোপচার, তাই অন্যান্য সার্জারির মতোই এতে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি হলো ফ্যাট ইমবলিজম বা চর্বির কণা ছুটে যাওয়া। এই চর্বি ধমনির যেকোনো জায়গায় আটকে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
এ ছাড়া ফোলাভাব, ত্বকের অস্বাভাবিকতা, ব্যথা বা অস্বস্তি—এগুলো খুব সাধারণ সমস্যা। জেনে রাখবেন, লাইপোসাকশন ওজন কমানোর কোনো পদ্ধতি নয়। এটি স্থূলতার স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। শুধুই শরীরের নির্দিষ্ট অংশের কিছু চর্বি কমানো। দীর্ঘ মেয়াদে ওজন কমাতে নিয়মিত শরীরচর্চা ও খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রক ওষুধ ব্যবহার করতে হলে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিতে হবে।
ডা. আফলাতুন আকতার জাহান, মেডিসিন স্পেশালিস্ট, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা