নারীর মাসিকের সময় তলপেটে হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি স্বাভাবিক একটি বিষয়। কিন্তু তা যদি তীব্র অস্বস্তি বা বেদনাদায়ক হয়, যা কিশোরী বা নারীর স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত করে, তখন এটিকে বলা হয় ডিসমেনোরিয়া বা পেইনফুল পিরিয়ড। এ রকম হলে এটিকে হেলাফেলা করার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।
ব্যথার ধরন
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া: সাধারণত কিশোরী ও তরুণীদের হয় এবং তেমন কোনো কারণ থাকে না। এ ক্ষেত্রে ব্যথা সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে শুরু হয় এবং দু–এক দিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। ব্যথা কোমর, তলপেট ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঊরুতেও অনুভূত হয়। ব্যথার সঙ্গে বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য বা পাতলা পায়খানা, মাথা ধরা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া: এটি সাধারণত পরিণত বয়সে হয়ে থাকে এবং যার উৎপত্তি অন্য কোনো অসুখের উপসর্গ হিসেবে। যেমন এন্ডোমেট্রিওসিস, পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ, অ্যাডেনোমাইওসিস, ফাইব্রয়েড ইউটেরাস ইত্যাদি।
এসব ক্ষেত্রে মাসিক শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে ব্যথা শুরু হয় এবং মাসিকের সময় তীব্রতা চরমে পৌঁছায়। মাসিক ভালো হওয়ার পরে ব্যথার তীব্রতা কারণ ভেদে সেরে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমলেও মাসজুড়ে কিছুটা থেকে যায়।
চিকিৎসা
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং জরুরি। পরবর্তী সময়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ সমস্যা ঠিক হয়ে যায়। পাশাপাশি তলপেট ও কোমরে গরম পানির সেঁক, ব্যথানাশক ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল, মেফেনামিক অ্যাসিড, আইবুপ্রোফেন ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে খাওয়ার জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও (ওরাল কনট্রাসেপটিভ পিল) দেওয়া হয়ে থাকে।
সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়ার ক্ষেত্রে একজন গাইনোকলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আলট্রাসনোগ্রাফি ও অন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে এগুলোর সঙ্গে ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যত্বের মতো সমস্যাও থাকতে পারে। তাই অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে এর চিকিৎসা নিতে হবে।
ডা. ফারহানা তারান্নুম খান, গাইনি অনকোলজিস্ট, জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল