২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ফুড পয়জনিং হলে কী করবেন

হঠাৎ করে পেটে প্রচণ্ড মোচড় দিয়ে পাতলা পায়খানা এবং বমি শুরু হওয়ার অভিজ্ঞতা কষ্টকর। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এর কারণ ফুড পয়জনিং। আমাদের দেশে খাদ্যে হাইজিন (স্বাস্থ্যবিধি) বজায় রাখার তদারকি নেই বলে ফুড পয়জনিং একটি বড় সমস্যা।

এ থেকে কখনো কখনো জটিলতা দেখা দিতে পারে, হাসপাতালে ভর্তি হয়েও চিকিৎসা নিতে হতে পারে। কখনো পরিবারের সবার একসঙ্গে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। আবার বিয়েবাড়ি বা উৎসব কিংবা কোনো রেস্তোরাঁয় খাবার খাওয়ার পর একসঙ্গে অনেকে আক্রান্ত হতে পারেন।

ফুড পয়জনিং আসলে কী

খাবারের সঙ্গে যদি ক্ষতিকর জীবাণু বা জীবাণু থেকে নিঃসৃত টক্সিন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, তখন নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এটাই ফুড পয়জনিং। খাবার প্রস্তুত, সংরক্ষণ ও পরিবেশনে সাবধানতা অবলম্বন না করলে ফুড পয়জনিং হতে পারে যেমন খাবার তৈরির আগে ভালো করে না ধোয়া, সঠিক তাপমাত্রায় রান্না না করা, ফ্রিজে খাবার সঠিক নিয়মে সংরক্ষণ না করা, বিশেষ করে শাকসবজি ও ফলমূল ভালো করে না ধোয়া ইত্যাদি।

আসলে খাবারের সঙ্গে নানা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও প্রোটোজোয়া লেগে থেকে অথবা তাদের দেহ নিসৃত টক্সিন শরীরে প্রবেশ করে ওই সমস্যা তৈরি হয়।

উপসর্গ

ভিন্ন ভিন্ন জীবাণু দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গ হয়ে থাকে। সাধারণত পেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা, বমি ও পাতলা পায়খানা বেশি হতে দেখা যায়। তা ছাড়া জ্বর, শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা এবং পায়খানার সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। কখনো কখনো পানিশূন্যতা হয়ে মারত্মক জটিলতাও দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা

  • ফুড পয়জনিং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টা থেকে দুই দিন স্থায়ী হয়ে নিজে থেকে ভালো হয়ে যায়। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন শরীর পানিশূন্য না হয়ে যায়। এ জন্য পর্যাপ্ত খাওয়ার স্যালাইন খেতে হবে এবং সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে।

  • জ্বর বা শরীর ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল–জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

সমস্যা দুই দিনের বেশি স্থায়ী হলে বা পায়খানার সঙ্গে রক্ত গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রতিরোধ

ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত, যেমন

  • যিনি বা যাঁরা খাবার তৈরি করবেন ও পরিবেশন করবেন, তাঁদের ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি।

  • খাবার, বিশেষ করে শাকসবজি, ফলমূল ও মাংস রান্নার আগে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত।

  • খাবার, বিশেষ করে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম সঠিক তাপমাত্রায় রান্না করতে হবে।

  • ফ্রিজে খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে ও বের করে আবার ভালো করে গরম করতে হবে।

  • বাইরের খোলা ও দূষিত খাবার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে।

  • ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন সহযোগী অধ্যাপক, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা