ডেঙ্গুতে ডাব কি খেতেই হবে?
বর্ষা শেষ হয়ে শরৎও শেষ হতে চলল। এখনো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রচুর মানুষ, মৃত্যুও হচ্ছে। ডেঙ্গু হলে চিকিৎসা কিন্তু তেমন কিছু নেই। বিশেষ করে স্বাভাবিক বা ক্ল্যাসিক্যাল ডেঙ্গুতে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামলই যথেষ্ট। সঙ্গে পূর্ণ বিশ্রাম আর পর্যাপ্ত তরল খাবার, ব্যস! তবে খাবারের ব্যাপারটা নিয়ে অনেকেই বেশ সংশয়ে থাকেন। কী ধরনের তরল খাবেন, কতটা খাবেন—ইত্যাদি প্রশ্ন মনে জাগে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে বেশির ভাগ রোগীই দিনে পাঁচ–সাতটা করে ডাব খান। এমনিতে ডাবের পানি পানীয় হিসেবে বেশ গুণাগুণসম্পন্ন। ক্যালরি কম অথচ পুষ্টিগুণ বেশি; সঙ্গে আবার বিভিন্ন খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে, যা কিনা পেট পরিষ্কার রাখে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, দরকারি লবণের উৎস। তবে ডেঙ্গুতে ডাব খেলে আলাদা কোনো উপকার পাওয়া যাবে না। বরং অতিরিক্ত ডাবের পানি খেলে শরীরে পটাশিয়াম এবং অন্যান্য লবণের মাত্রা বেড়ে অনর্থ ঘটতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরে সবচেয়ে দরকারি পানীয় হচ্ছে খাবার স্যালাইন। সঙ্গে শরবত, ফলের রস, স্যুপ, ডালের পানি, চিড়ার পানি—ইত্যাদি তরলজাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। অনেকেই ভয়ে অতিমাত্রায় তরল খাবার বা স্যালাইন খেতে থাকেন। যদি সাধারণ ডেঙ্গু হয় আর সঙ্গে স্বাভাবিক রক্তচাপ থাকে, তাহলে দিনে তিন লিটারের মতো তরল বা তরল খাবার খেলেই চলে। রক্তচাপ কমে গেলে বা অন্য কোনো জটিলতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে তরল খাবার বা স্যালাইনের পরিমাণ নির্ধারণ করাই ভালো।
বেশি তরল পানও কিন্তু বিপদ ডেকে আনতে পারে। ডেঙ্গু হলে অনেকেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অতিমাত্রায় ডাবের পানি খাচ্ছেন, কেউবা পেঁপেপাতার রস খাচ্ছেন—এসব কোনো খাবারেই রক্তের প্লাটিলেট বাড়ে, এমন কোনো প্রমাণ নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডেঙ্গুতে যে প্লাটিলেট কমে, তা কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসে। আর রক্তচাপ কমে গেলে তার জন্যও ডাবের পানির আলাদা কোনো ভূমিকা নেই, বরং খাবার স্যালাইন এই ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই ডেঙ্গু হলেই ডাব খেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।