নাভিতে হার্নিয়া হলে কীভাবে বুঝবেন, চিকিৎসা কী?

নাভিতে হার্নিয়া বা আম্বিলিক্যাল হার্নিয়া একটা পরিচিত সমস্যাপ্রতীকি ছবি: প্রথম আলো

নাভিতে হার্নিয়া বা আম্বিলিক্যাল হার্নিয়া একটা পরিচিত সমস্যা। নাভি বা নাভির চারপাশে পেটের দেয়ালের পেশিতে দুর্বলতা থাকলে নাভির হার্নিয়া হয়। এই দুর্বলতা জন্ম থেকেই থাকতে পারে বা বিভিন্ন কারণে পরবর্তীকালেও দেখা দিতে পারে।

নাভিতে হার্নিয়া বা আম্বিলিক্যাল হার্নিয়া একটা পরিচিত সমস্যা। এই স্থানে হার্নিয়া হলে পেটের পেশির দুর্বল জায়গা দিয়ে অন্ত্র বা ফ্যাটি টিস্যু স্ফীত হয়ে বেরিয়ে আসে। নাভি বা নাভির চারপাশে পেটের দেয়ালের পেশিতে দুর্বলতা থাকলে নাভির হার্নিয়া হয়। এই দুর্বলতা জন্ম থেকেই থাকতে পারে বা বিভিন্ন কারণে পরবর্তীকালেও দেখা দিতে পারে। যেসব কারণ ঝুঁকি বাড়ায় সেসব হলো স্থূলতা, গর্ভাবস্থা, দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা হাঁচি, মলত্যাগের সময় স্ট্রেনিং বা অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ, ভারোত্তোলন, আগে পেটের সার্জারির ইতিহাস বা জেনেটিক কারণ।

কীভাবে বুঝবেন

নাভির হার্নিয়ার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো নাভির চারপাশ ফুলে যাওয়া। দাঁড়ানো, কাশি বা স্ট্রেন করার সময় এই স্ফীতি আরও লক্ষণীয় হতে পারে। সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ থাকতে পারে। যেমন ফুলে যাওয়া স্থানে ব্যথা বা অস্বস্তি, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, স্ফীতির চারপাশে লাল ভাব বা বিবর্ণতা, গ্যাস পাস করতে না পারা বা মলত্যাগ করতে কষ্ট, জ্বর অথবা দ্রুত হৃৎস্পন্দন (যদি হার্নিয়া অবস্ট্রাক্টটেড হয়ে যায় বা আটকে যায়)।

চিকিৎসক উপসর্গ এবং ইতিহাস জেনে এবং শারীরিক পরীক্ষা করেই এটি নির্ণয় করতে পারেন। পেটের নাভির চারপাশে ফুসকুড়ি পরীক্ষা করার জন্য একটি শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্য ইমেজিং পরীক্ষা, যেমন আলট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যানের প্রয়োজন হতে পারে।

নাভির হার্নিয়ার চিকিত্সা কীভাবে করা হয়

আম্বিলিক্যাল হার্নিয়ার জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয় যদি এটি বেদনাদায়ক হয়, বড় হয়ে যায় বা খাদ্যনালি আটকে যায়। যদি হার্নিয়া ছোট হয় এবং কোনো উপসর্গ সৃষ্টি না করে, তবে আপনার চিকিৎসক এটি পর্যবেক্ষণ করার এবং এটি বড় হয় কি না, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন।

সার্জারি: যদি হার্নিয়া উপসর্গ সৃষ্টি করে বা অবস্ট্রাকশন হওয়ার ঝুঁকি থাকে, তাহলে হার্নিয়া সারিয়ে তুলতে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। অস্ত্রোপচারের মধ্যে খাদ্যনালিকে পেটের গহ্বরে ঠেলে দেওয়া এবং সেলাই বা জাল দিয়ে দুর্বল জায়গাটিকে শক্তিশালী করা হয়ে থাকে।

কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়?

যদিও নাভির হার্নিয়া সব সময় প্রতিরোধ করা যায় না, তবে এমন কিছু পদক্ষেপ আছে, যা ঝুঁকি কমাতে পারে।

  • সঠিক ওজন বজায় রাখুন।

  • ভারী জিনিস উত্তোলন এড়িয়ে চলুন।

  • দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা কোষ্ঠকাঠিন্যের দ্রুত চিকিৎসা করান, যাতে পেটে চাপ না পড়ে।

  • ধূমপান বর্জন করুন।

ডা. ইসমাত লিমা: সহকারী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, ঢাকা