শীতের হিমেল হাওয়া দরজায় কড়া নাড়ছে। এ সময় ঠান্ডাজনিত রোগে শিশুরা আক্রান্ত হয় বেশি। কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে এ সময় জীবাণুর বিস্তার রোধ ও শীত মৌসুমকে তাদের জন্য নিরাপদ রাখা যায়।
এ জন্য যেসব বিষয় মেনে চলতে হবে—
হাত ধোয়ার অভ্যাস: শিশুদের নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে, তা শীত বা গ্রীষ্ম—যেকোনো সময়। বিশেষ করে বাইরে থেকে বাসায় ফিরলে এবং কোনো কিছু খাওয়ার আগে। এই অভ্যাস শরীরে জীবাণু প্রবেশকে প্রতিরোধ করে এবং অনেক রোগবালাইকে দূরে রাখে।
হাঁচি–কাশির আদবকেতা: শিশুদের হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখতে শেখানোর পাশাপাশি হাঁচি বা কাশি এলে হাতের পরিবর্তে টিস্যু বা বাহু ব্যবহার করতে শেখানো উচিত। এতে জীবাণু পরিবেশে ছড়াতে পারে না।
পোশাক: শিশুদের জামাকাপড়, স্কুলের কাপড় প্রতিবার ব্যবহারের পর ধুয়ে ফেলুন, ঘন ঘন তাদের বিছানার বালিশের কভার ও চাদর পরিবর্তন করুন। তাদের জন্য আলাদা তোয়ালে রাখুন। এ ছাড়া শিশুদের শরীরে যেন ভেজা কাপড় না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
খাদ্যাভ্যাস: ঠান্ডা আবহাওয়ায় সাধারণত অনেকেই অপর্যাপ্ত পানি পান করি। সে ক্ষেত্রে আপনার শিশু পর্যাপ্ত পানি পান করছে কি না, খেয়াল রাখুন। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর, ভিটামিনসমৃদ্ধ ও শরীরকে উষ্ণ রাখে, এমন খাবার রাখার চেষ্টা করুন, যা শিশুদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
অসুস্থ মানুষ থেকে দূরে রাখা: বাড়িতে কারও ঠান্ডাজনিত অসুখ হলে শিশুদের তাদের থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। একইভাবে শিশুর জ্বর–কাশি হলে স্কুলে না দেওয়াই ভালো।
টুথব্রাশ নিয়ে সতর্কতা: বাসায় কেউ অসুস্থ হলে তাদের টুথব্রাশ আলাদা রাখুন। এ ছাড়া শিশুদের টুথব্রাশ মাঝেমধ্যে পরিবর্তন করুন।
বাইরে গেলে করণীয়: শিশুদের জন্য আরামদায়ক, এমন পোশাক নির্বাচন করুন। শিশুদের ত্বক সংবেদনশীল হওয়ায় নরম ও উচ্চ মানের পশমি কাপড় উপযোগী হতে পারে। বাইরে গেলে মোজা, টুপি, গ্লাভস পরিয়ে নিন।
এ ছাড়া বাইরে গেলে শিশুরা যেন তাদের মুখ স্পর্শ না করে, সেটি মনে করিয়ে দিন। বিশেষ করে পাবলিক স্পেস (বাসের সিট, দরজার হাতল, পাবলিক বাথরুম) স্পর্শ করার পর সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের নিয়ে রোদে বের হলে সূর্যের সংস্পর্শে আসা শরীরের অংশে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন।
ডা. কামরুজ্জামান নাবিল, ইস্পাহান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইরান