কিডনি রোগীদের কী খাওয়া উচিত বা অনুচিত
কিডনির রোগে ভুগছেন, এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কিডনি সমস্যার অন্যতম কারণ। সমাজে এই দুটি রোগের প্রাদুর্ভাব যত বাড়বে, তত বাড়বে কিডনি রোগীর সংখ্যা। কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুব সতর্ক থাকতে হয়। এ রোগে রক্তে লবণ ও পানির ভারসাম্য বিনষ্ট হয়, রক্তে অ্যাসিড ও ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায়। খাবারের সঙ্গে এসব পরিবর্তন ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এ কারণে কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে আর কোনটা পরিহার করতে হবে, তা জানা জরুরি।
টকজাতীয় কিছু ফল যেমন কমলা, তেঁতুল খাওয়া যাবে না। এ ছাড়া অন্যান্য সাইট্রাস ফল যেমন লেবু, মাল্টা, আমলকী কম খাওয়া উচিত। তবে ফলের মধ্যে আপেল, পেয়ারা খাওয়া যাবে।
শাকের মধ্যে লালশাক, ধনেপাতা, পালংশাক, মুলাশাক, পুঁইশাক খাওয়া যাবে না। তবে ডাঁটাশাক, হেলেঞ্চাশাক, কচুশাক খাওয়া যাবে।
মুলা, পেঁয়াজ, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, করলা, ব্রকলি, ফুলকপি, শসা (বিচি ব্যতীত) খাওয়া যাবে।
অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার যেমন কলিজা, শিমের বিচি, বরবটি, ছোলা, শুঁটকি, সামুদ্রিক মাছ খাওয়া অনুচিত।
কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া যাবে না। যেসব ফল খাওয়া যাবে, সেসবের রস বা জুসও খাওয়া যাবে। চা, কফি কম খাওয়া উচিত।
ডিমের সাদা অংশ, মাছ (সামুদ্রিক মাছ ব্যতীত), মুরগির মাংস—এ–জাতীয় প্রোটিন খাওয়া যাবে। গরু বা খাসির মাংস পরিহার করা ভালো।
রুটি, পরিমাণমতো ভাত, চিড়া খাওয়া যাবে।
ঘন ডাল খাওয়া যাবে না। তবে ডালের পানি খেতে পারবেন।
বেশি পটাশিয়ামযুক্ত খাবার যেমন কলা, টমেটো, ডাবের পানি কম খেতে হবে। কম পটাশিয়ামযুক্ত খাবার যেমন নুডলস, পাস্তা খাওয়া যাবে।
তেলেভাজা খাবার যেমন পিয়াজু, বেগুনি খাওয়া উচিত নয়।
কিডনি রোগীরা খাদ্যতালিকা মেনে চললে সুস্থ–স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। কিডনি রোগীদের অবশ্যই একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বা কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ওষুধ ও ডায়েট চার্ট মেনে চলা উচিত।
লেখক: মেডিসিন কনসালট্যান্ট
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি