এসব উপসর্গ ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতির লক্ষণ না তো
দেহের ভেতরে আমাদের অগোচরে চলে বহু ক্রিয়া–বিক্রিয়া। আমাদের দেহের বিপাকক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপের জন্য খুবই জরুরি এক উপাদান ম্যাগনেশিয়াম। ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে এসব ক্রিয়া–বিক্রিয়া ব্যাহত হয়। এরই প্রভাব পড়ে দেহে। আমাদের দেশে আজকাল অনেকেই ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিতে ভোগেন। এ সম্পর্কে বলছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মতলেবুর রহমান।
সাধারণ উপসর্গ
ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে দেহে পর্যাপ্ত শক্তি উৎপাদন হয় না। খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনি দুর্বল বোধ করবেন। অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন।
আপনার মনে হতে পারে, পেশির জোর স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেছে। পেশিতে টান ধরতে পারে সহজেই। পেশিতে ব্যথা বোধ করতে পারেন।
কারও কারও প্রায়ই ম্যাগনেশিয়ামের অভাবে মাথাব্যথা হয়। ক্ষুধামান্দ্য, বমি ভাব কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
কেউ কেউ চিনির প্রতি বাড়তি ঝোঁক অনুভব করেন।
সুখের হরমোন হিসেবে স্বীকৃত সেরোটোনিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতেও কাজ করে ম্যাগনেশিয়াম। চাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্টিসল হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে সাধারণ কিছু শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি কাউকে কাউকে মানসিক চাপেও ভুগতে দেখা যায়।
কারও কারও ক্ষেত্রে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। মনোযোগের অভাবও হতে পারে।
করণীয়
এসব সাধারণ সমস্যা দেখা দিলেই যে আপনাকে দোকান থেকে ম্যাগনেশিয়াম সাপ্লিমেন্ট কিনে খেতে হবে, তা কিন্তু নয়। প্রথমেই ভেবে দেখুন, আপনার জীবনধারা কতটা স্বাস্থ্যকর। খেয়াল করুন, আপনি ঠিকঠাক বিশ্রাম নিচ্ছেন কি না, পর্যাপ্ত পানি পান করছেন কি না, সুষম খাবার খাচ্ছেন কি না। খাবারের পদে বৈচিত্র্য রাখুন। শাক, শিমের বিচি, রাজমা, মটরদানা, খোসাসহ আলু প্রভৃতি খাবারে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে।
গোটা শস্যেও (অর্থাৎ যা রিফাইনড নয়) পাবেন পর্যাপ্ত ম্যাগনেশিয়াম। আরও ভেবে দেখুন, নির্দিষ্ট কোনো কারণে আপনি মানসিক চাপে আছেন কি না। মানসিক চাপের কারণেও কিছু শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়। খাওয়াদাওয়া, পানি ও বিশ্রামের বিষয়গুলো ঠিক রাখার পাশাপাশি মনেরও যত্ন নিন। এরপরও সমস্যাগুলো রয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজন মনে করলে তিনি রক্তের ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করতে দেবেন। সেই অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেবেন তিনি। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত ম্যাগনেশিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা ঠিক নয়।
খেয়াল রাখুন
কারও কারও ক্ষেত্রে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতির জন্য হৃৎপিণ্ডের ছন্দ ব্যাহত হয়। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেই বিষয়টা অনুভব করতে পারেন। ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি খুব বেশি হলে কারও কারও আবার খিঁচুনিও হয়। এ ধরনের কোনো সমস্যা হলে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসা নিন।