কোলনে পলিপ কেন হয়
কোলন বা বৃহদন্ত্রের দেয়ালে দেখা দেওয়া আঙুরের মতো অস্বাভাবিক ঝুলন্ত টিস্যুই হচ্ছে পলিপ। কোলনে হয় বলে একে কোলন পলিপ বলা হয়। সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সের পর এই পলিপ দেখা দেয়। অবশ্য জেনেটিক কারণে কারও কারও খুব ছোট বয়সেই কোলনে পলিপ হতে পারে।
সময়মতো চিকিৎসা না করালে কোনো কোনো পলিপ পরবর্তী সময়ে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
উপসর্গ
কোলনে পলিপ হলে প্রাথমিকভাবে কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে সাধারণত পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া, আলকাতরার মতো পায়খানা (কালো) হওয়া, রক্তশূন্যতা, পেটের ব্যথা, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি উপসর্গ হতে পারে।
রোগ নির্ণয়
কোলনের পলিপ নির্ণয়ের আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা হচ্ছে কোলনস্কোপি। একমাত্র এই পরীক্ষার মাধ্যমেই কোলনের পলিপ সঠিকভাবে শনাক্ত করা যায়। কোলনস্কোপি একটি সহজ ও নিরাপদ পরীক্ষা।
চিকিৎসা
কোলনের বেশির ভাগ পলিপ কোলনস্কোপির মাধ্যমেই অপসারণ করা যায়। এ জন্য বড় কোনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না। অস্ত্রোপচারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রোগী বাসায় ফিরে যেতে পারেন এবং দুই-তিন দিনের মধ্যে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেন। এমনকি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রোগী স্বাভাবিক খাবার খেতে পারেন।
কোলনের পলিপ অপসারণের পর সেগুলো হিস্টোপ্যাথলজি নামের একটি পরীক্ষা করে দেখতে হয়, তাতে কোনো ক্যানসার আছে কি না।
কোলনের পলিপ অপসারণ করার পর সাধারণত নির্দিষ্ট সময় পরপর কোলনস্কোপি করে দেখতে হয় আবারও পলিপ হয়েছে কি না। এটা দুই থেকে পাঁচ বছর পরপর হতে পারে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক সময় ঠিক করবেন।
সতর্কতা
কিছু কিছু পলিপ আছে বংশগত, যেগুলো সাধারণত ছোটবেলায় হয়ে থাকে। কারও যদি বংশগত পলিপ হয়, তাহলে তাঁর নিকটজনদেরও কোলনস্কোপি পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিত হবে পলিপ আছে কি না।
অনেকেরই কোলনে পলিপ হয়ে থাকে। এ রোগের লক্ষণ দেখা দিলে অথবা সন্দেহ হলে অবশ্যই পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিতে হবে পলিপ হয়েছে কি না। প্রাথমিক অবস্থায় পলিপ অপসারণ করতে পারলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে না।
ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক, পরিপাকতন্ত্র, লিভার ও প্যানক্রিয়াস রোগ বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল