পবিত্র ঈদুল ফিতর ঘিরে আনন্দের একটি বড় অংশ হলো ঐতিহ্যবাহী বাহারি খাবারদাবারের আয়োজন। তবে সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে এই সময়ে একটু সাবধানে খাওয়াদাওয়া করা উচিত। এক মাস রোজা রাখার পর হঠাৎ ঈদের দিন খাবারদাবারের ভুল থেকে স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হলে পুরো আনন্দই মাটি হতে পারে। তা ছাড়া এবার প্রচণ্ড গরম পড়েছে। খাবার নির্বাচনের সময় এ কথাও মনে রাখতে হবে।
সকালের খাবার
যেহেতু এক মাস একই নিয়মে রোজা রাখার পর ঈদের সকালে প্রথম খেতে হচ্ছে, সেহেতু হঠাৎ একসঙ্গে বেশি খাবার খেয়ে ফেলা ঠিক নয়। এতে বদহজম, পেটে অস্বস্তিসহ নানা সমস্যা হতে পারে। তাই একটু হালকা খাবার খাওয়াই ভালো। সে ক্ষেত্রে দুধ, চাল ও গুড় দিয়ে ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন ফিরনি, যা থেকে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও মিনারেল পাওয়া যায়। ফলের জুস বা ফলও থাকতে পারে সকালের খাবারে।
এ ছাড়া তেলছাড়া পাতলা পরোটা আর সবজিও খাওয়া যেতে পারে। তবে ঈদের দিন ডিম না খাওয়াই ভালো। কেননা এই উৎসবে মাংস খাওয়া হয় বেশি। তাই ডিম না খেলে পুষ্টির একটা ভারসাম্য থাকে।
দুপুরের খাবার
দুপুরে খাবারের তালিকায় বেশি পদ না রাখাই ভালো; বরং দুই থেকে তিনটি খাবার ভালোভাবে রান্না করলে পুষ্টি, তৃপ্তি, ক্যালরি—সবই পূরণ সম্ভব। এ জন্য থাকতে পারে মাছের পদ।
কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা মেটাতে দুপুরের খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন সাদা পোলাও বা খিচুড়ি। সবুজ সালাদ বা টক দই অবশ্যই রাখুন।
রাতের খাবার
অনেকেই সারা দিনের অনেক পদের খাবার খাওয়ার পর রাতে তেমন খেতে পারেন না। আবার যা খেতে পছন্দ করেন, তা-ও ঠিকমতো খেতে পারেন না। তাই রাতের খাদ্যতালিকায় খুব বেশি পদ রাখবেন না। রুটি বা সাদা ভাতের সঙ্গে মুরগি বা গরুর কাবাব, সবজি বা মাংসের অন্য কোনো পদ থাকতে পারে। আবার একটু ভিন্নধর্মী খাবারের স্বাদ নিতে চাইলে চায়নিজ ফুডও ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন। কেননা এ জাতীয় খাবারে তেল-মসলা কম থাকে।
আরও যা করবেন
প্রচণ্ড গরমে হজমে সমস্যা হতে পারে, তাই খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি, শরবত, ফলের রস ও অন্য তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে। এতে গুরুপাক খাবারের জন্য পেটে স্থান কমে যাবে। লেবুর রস, চিনি ও লবণ দিয়ে শরবত খাওয়ার পাশাপাশি খেতে পারেন ডাব, মাল্টা, আনারস, লাচ্ছি ইত্যাদি।
ইসরাত জাহান, পুষ্টিবিদ, সাজেদা ফাউন্ডেশন