এ সময় জ্বর হলে ডেঙ্গু, করোনা ও সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসজনিত জ্বরের কথা সবার আগে ভাবতে হবে। এ ছাড়া শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, প্রস্রাব সংক্রমণ, টাইফয়েড ইত্যাদি কারণেও জ্বর হতে পারে। এমনকি জ্বর হতে পারে দাবদাহ থেকেও। জ্বরের পাশাপাশি আনুষঙ্গিক আরও কিছু লক্ষণ দেখে জ্বরের কারণ নির্ণয় করা সম্ভব।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভাইরাসজনিত জ্বরের লক্ষণ প্রায় একই ধরনের। এ কারণে ডেঙ্গু, করোনা ও সাধারণ ভাইরাসজনিত জ্বরের মধ্যে প্রথম দু-এক দিন পার্থক্য করা মুশকিল। আনুষঙ্গিক লক্ষণ অনুযায়ী প্রথমেই ডেঙ্গু ও করোনা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া দরকার। এরপর সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
জ্বর হলে কী করবেন
তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন; ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে তাপমাত্রা কমানোর ব্যবস্থা নিন।
তাপমাত্রা কমানোর জন্য জলপট্টি বিশেষ কার্যকরী। সে জন্য কপালে জলপট্টি দিন। গামছা বা তোয়ালে পানিতে ভিজিয়ে গা মুছে দিন।
রোগীকে ফ্যানের নিচে রাখুন অথবা হাতপাখা দিয়ে বাতাস করুন।
রোগীকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা ও আলো-বাতাসপূর্ণ কক্ষে রাখুন।
জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ দিন।
জ্বরের সময় শরীর পানিশূন্য হয়ে যায়। এ জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করাতে হবে। পাশাপাশি শরবত, ফলের রস, ডাবের পানি, স্যালাইন দিন।
পর্যাপ্ত পুষ্টিদায়ক খাবার জরুরি। এ সময় মুখে রুচি চলে যায়। মৌসুমি ফল, সহজ পাচ্য খাবার, নরম খিচুড়ি, সুপ ইত্যাদি খেতে দিন।
আম, আনারস, পেয়ারা, কমলায় পর্যাপ্ত ভিটামিন সি-সহ অন্যান্য খনিজ উপাদান রয়েছে, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
চা, কফি, অ্যালকোহল পরিহার করা ভালো। এসবই পানিশূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে।
জ্বরের সময় বেশি ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবে না। এতে রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয়, ফলে শরীরে তাপ আটকে থাকে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
তিন দিন পরও জ্বর না কমলে কিংবা জ্বরের মাত্রা যদি অত্যধিক হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জ্বরের সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বারবার বমি, ত্বকে ছোপ দাগ, হৃৎস্পন্দন অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়া, শ্বাসকষ্ট, এলোমেলো আচরণ, অসংলগ্ন কথাবার্তা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে বিলম্ব না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
যা মেনে চলতে হবে
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখে রুমাল ব্যবহার করা, বাইরে বেরোলে মাস্ক পরতে হবে।
অত্যধিক গরমে রোদে ঘোরাফেরা না করাই উচিত।
লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ