হাত, ঘাড় ব্যথায় নাড়াতে পারছেন না?

ফ্রোজেন শোল্ডার বা কাঁধে ব্যথার অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ রোটেটর কাফ সিনড্রোমছবি: পেক্সেলস

ফ্রোজেন শোল্ডার শব্দটির সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত। ফ্রোজেন শোল্ডার বা কাঁধে ব্যথার অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ রোটেটর কাফ সিনড্রোম। এটি বেশ কয়েকটি সমস্যার সমাহার, যার একটি অংশ হলো ফ্রোজেন শোল্ডার। রোটেটর কাফ সিনড্রোমের অংশগুলো হলো—ক. ফ্রোজেন শোল্ডার, খ. সুপ্রাস্পাইনাটাস টেন্ডিনাইটিস, গ. বাইসেপস টেন্ডিনাইটিস, ঘ. ইম্পিঞ্জমেন্ট টেন্ডিনাইটিস ও ঙ. ক্যালসিপিক টেন্ডিনাইটিস।

৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে এ রোগ বেশি হয়ে থাকে। এ রোগের সম্পর্ক আছে কয়েকটি রোগের সঙ্গে, যেমন হৃদ্‌রোগ, পক্ষাঘাত, হাইপার থাইরয়েডিজম, হাইপার লিপিডেমিয়া, বড় অস্ত্রোপচার যেমন নিউরোসার্জিক্যাল অপারেশনের পর।

লক্ষণ

  • শোল্ডার মুভমেন্ট বাধাগ্রস্ত হয়ে ব্যথা হয়। অনেক সময় রোগী কাঁধ জমে গেছে বলে অভিযোগ করেন।

  • হাত ওপরে ওঠাতে কষ্ট হয়। হাত দিয়ে স্বাভাবিক কাজেও অনেক কষ্ট বা ব্যথা হয়ে থাকে। রোগী অনায়াসে হাত ওঠাতে পারেন না।

  • দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজ, যেমন চুল আঁচড়ানো, চুল বাঁধা, গায়ে সাবান দেওয়া ইত্যাদিতে সমস্যা দেখা দেয়।

এ অবস্থায় হাত একটু ওঠাতে হলে শোল্ডার মুভমেন্ট না করে স্কোপিউলার মুভমেন্ট বা রোটেশন করে হাত নাড়াতে পারেন।

রোগনির্ণয়

পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ রোগ নির্ণয় করা কঠিন। ব্যথা অনেক, কিন্তু এক্স-রেতে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যায় না।

এ রোগের তিনটি পর্যায় আছে—১. সাব-অ্যাকিউট ফেজ, ২. ক্রনিক ফেজ ও ৩. রোটেটর কাফ টিয়ার। তিনটি পর্যায় পার হয়ে সাধারণত ১৮ মাসের মধ্যে এ রোগ আপনা-আপনি ভালো হয়ে যায়। কিছু স্টিফনেস থাকে, যা সারতে আরও ৬ থেকে ১২ মাস সময় লাগতে পারে।

রোগটির সঙ্গে অন্যান্য রোগের কিছু মিল আছে, যেমন আঘাতের পরে স্টিফনেস, হাড়ের সংক্রমণ, রিফ্লেক্স সিমপ্যাথেটিক সিনড্রোম।

প্রতিকার

  • এ রোগে ফিজিওথেরাপির তেমন কোনো ভূমিকা নেই। কনজারভেটিভ চিকিৎসায় ব্যথানাশক বা অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটরি ওষুধ ও ব্যায়াম উপকারী।

  • পেন্ড্রুলার এক্সারসাইজ রোগী নিজে করবেন। কোমর নুয়ে একদিকে কাত হয়ে ঘড়ির পেন্ডুলাম বা স্টেয়ারিংয়ের মতো শোল্ডার মুভমেন্ট করে উপকৃত হতে পারেন।

  • কনজারভেটিভ চিকিৎসায় কাজ না হলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিগামেন্ট রিলিজ করে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

  • ডা. মো. মাহবুব আলম, সহযোগী অধ্যাপক, ফিজিক্যাল মেডিসিন, মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা