ভিটামিন ওষুধ খেলে কি সত্যিই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে
শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। আর অনেকেরই ধারণা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায় ভিটামিনের অভাবে। কিংবা শারীরিক দুর্বলতার মূল কারণ ভিটামিনের ঘাটতি। তাই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়বে ভেবে অনেকেই প্রচুর ভিটামিন ওষুধ খেয়ে বসেন। এ ধারণা কতটা যৌক্তিক, তা জেনে নেওয়া যাক এখানে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ওষুধের ভূমিকা একেবারেই সামান্য। সত্যিকার অর্থে রোজ আমরা যেসব খাবার খাই, তার মধ্যেই পর্যাপ্ত ভিটামিন বিদ্যমান। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে অক্ষম, বয়োবৃদ্ধ, সন্তানসম্ভবা নারী, রোগাক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়া সুস্থসবল মানুষের জন্য খাবারের বাইরে ভিটামিন ওষুধ খাওয়ার দরকার পড়ে না।
খাবারের বাইরে ভিটামিন কখন সেবন করতে হবে
কোনো ভিটামিন সেবনের আগে পরীক্ষা করে শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ওষুধ সেবন করতে হবে।
যাঁরা বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, অথবা যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম এবং যথেষ্ট খেতে পারেন না, যেমন ক্যানসার আক্রান্ত ব্যক্তি, সন্তানসম্ভবা নারী ইত্যাদি।
কখনো কিছু নির্দিষ্ট ভিটামিনের অভাবে নির্দিষ্ট উপসর্গ দেখা দেয়, যেমন ভিটামিন বি১২-এর অভাবে স্নায়ুজনিত সমস্যা, ভিটামিন ডি-র অভাবে হাড়ক্ষয় ইত্যাদি। এসব উপসর্গ দেখে সন্দেহ হলে পরীক্ষা করে মাত্রা দেখে তারপর তা পূরণ করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকারী নারীদের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাড়তি আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম সেবন করতে হয়।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতে তাহলে কী করবেন
সুষম খাবার গ্রহণ করুন।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল রাখতে হবে।
প্রতিদিন ন্যূনতম দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করুন।
পরিমিত ঘুমান (অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তোলা)।
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও হাঁটার অভ্যাস করুন।
যতটা পারা যায় দুশ্চিন্তা কম করুন।
শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
খাবার আগে ও পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন।
শরীরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো লাগান।
ধূমপান, মদ্যপান ও সব ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
যেসব টিকা প্রচলিত আছে, তা নিন।
মোটকথা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাধারণ অবস্থায় খাবারের বাইরে ভিটামিন সেবনের প্রয়োজন নেই, বরং নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যকর জীবনাচরণই পারে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে।