মাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন
দৈনন্দিন কাজের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে এখন স্মার্টফোন–কম্পিউটার। দিনের বড় একটা সময় এখন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই চলে যায়। মোবাইল-কম্পিউটারের পর্দা যেমন আমাদের কাজ সহজ করে দিয়েছে, তেমনই অতিরিক্ত পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার প্রভাব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর পড়ছে। ডিজিটাল যুগে যেমন দৈনন্দিন কাজের জন্য পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকা জরুরি, তেমনই শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখাটাও জরুরি।
স্ক্রিনটাইম যেভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে
মাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম ব্রেনের নিউরোকেমিক্যাল ব্যালেন্সে প্রভাব ফেলে। এর ফলে মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়।
যত বেশি স্ক্রিনটাইম, তত বেশি ব্লু লাইটের সংস্পর্শ। অতিরিক্ত ব্লু লাইট স্বাভাবিক ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
স্ক্রিনের সামনে অনেকক্ষণ বসে থাকার কারণে অনেকেরই পিঠ ও কোমরে ব্যথা দেখা দেয়। খুব একটা নড়াচড়া হয় না বলে শারীরিক নানা সমস্যাও দেখা যায়। এ ছাড়া অতিরিক্ত সময় তাকিয়ে থাকা চোখের ক্ষতি করে।
একটা স্ক্রিনের ভেতরেই সবকিছু পাওয়া যায় বলে অনেকেই সৃজনশীল চিন্তাভাবনা কমিয়ে দেন। এর ফলে অনেকেই পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।
যেভাবে স্ক্রিনটাইম ভারসাম্য করবেন
প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যান: প্রতিদিন নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখুন। যেখানে সবুজ গাছপালা, নদী–নালা বা বিল দেখে সময় কাটাবেন, সূর্যের আলোতে সময় কাটাবেন। যদিও শহুরে জীবনে এমন অভ্যাস করা বেশ কঠিন, তবুও নিজের জন্য স্ক্রিনের বাইরেও আলাদা করে সময় রাখুন। প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটালে আপনার নার্ভাস সিস্টেম শান্ত হবে, স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এ ছাড়া সূর্যের আলোতে সময় কাটালে মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
সময়সীমা নির্ধারণ করে দিন: এখন প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোনেই সময়সীমা নির্ধারণ করার অপশন রয়েছে। দিনে প্রয়োজনের বেশি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। প্রয়োজন হলে স্ক্রিনটাইম নির্ধারণ করে দিন, এতে করে প্রযুক্তি নিজেই আপনাকে অতিরিক্ত সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেবে না। এ ছাড়া চাইলে কিছুক্ষণ পরপর বিরতির অ্যালার্ট চালু করতে পারেন। এতে করে একটানা অনেকক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে প্রযুক্তিই আপনাকে বাধা দেবে।
ব্যায়াম করুন: প্রযুক্তি যেখানে স্ট্রেস বাড়িয়ে দিচ্ছে, সেখানে এই স্ট্রেস থেকে মুক্তি দিচ্ছে ব্যায়াম। স্ক্রিনের সামনে অতিরিক্ত সময় বসে থাকার ফলে ব্রেন কানেক্টিভিটির ওপর যে প্রভাব পড়ছে, তা দূর করতে সাহায্য করে ব্যায়াম। ব্যায়াম ব্রেনে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, অতিরিক্ত পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে তৈরি হওয়া হরমোনাল ইমব্যালেন্স ঠিক করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া প্রতিদিন হাঁটাচলা করা, কিছু সময় দৌড় শরীরকে চাঙা করে তোলে। দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে শরীরে যে আড়ষ্টতা তৈরি হয়, তা এড়ানো যায়।
ঘুমের সময় নির্ধারণ করুন: ঘুমানোর আগে ফোন নিয়ে বসা ভালো ঘুমকে নষ্ট করে। স্মার্টফোন, কম্পিউটারের স্ক্রিন থেকে তৈরি ব্লু লাইট ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে স্মার্টফোন দূরে সরিয়ে রাখুন। এই সময়ে বই পড়া কিংবা সৃজনশীল কিছু করার চেষ্টা করুন।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া ডটকম