সারা দিন কি আপনার খালি ঘুম পায়? জেনে নিন কীভাবে ঠেকাবেন

অপর্যাপ্ত ঘুম ক্লান্তির একটি সাধারণ কারণ
ছবি: সংগৃহীত

আপনার কি সব সময় ক্লান্ত লাগে? কেবলই ঘুম পায় সারা দিন? মনে রাখবেন, এই সমস্যা শুধু আপনার একার না। গবেষণা বলছে, প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের একজন সপ্তাহে অন্তত তিন দিন দিনের বেলায় অত্যধিক ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি আপনার জীবনযাত্রার মান যেমন কমিয়ে দিতে পারে, অন্যদিকে এই ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে কোনো রোগেরও লক্ষণ। তাই বিষয়টিকে হেলাফেলা করার সুযোগ নেই।

এমন কেন হয়

  • সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম দরকার। অপর্যাপ্ত ঘুম ক্লান্তির একটি সাধারণ কারণ। মানসিক চাপ, রোগ ও পরিবেশ ঘুমকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে, ফলে কাটাতে হতে পারে নিদ্রাহীন রাত। আপনার যদি ইনসমনিয়া থাকে, তবে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

  • আয়রন, ভিটামিন বি১২, ডি-র মতো কিছু পুষ্টিঘাটতি ক্লান্তির কারণ হতে পারে।

  • অত্যধিক চাপ ক্লান্তি তৈরি করতে পারে। নিজের জন্যও সময় রাখুন।

  • অনেক রোগ ক্লান্তির সঙ্গে যুক্ত যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া, হাইপোথাইরয়েডিজম, ক্যানসার, ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোম, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, কিডনি রোগ, বিষণ্নতা, ডায়াবেটিস ও ফাইব্রোমায়ালজিয়া। অনেকদিন ধরে আপনার যদি ক্লান্ত ভাব থাকে, তবে উপযুক্ত পরীক্ষার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।

আরও পড়ুন
  • স্টেরয়েড, রক্তচাপের ওষুধ ও অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টসহ কিছু ওষুধ অনিদ্রা ও ক্লান্তির মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া করে।

  • আল্ট্রা প্রসেসড খাবার আপনার শক্তির মাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই ফল, শাকসবজি, ডাল জাতীয় খাবার, বাদামের মতো পুষ্টিকর খাবার ক্লান্তি কমাতে পারে।

  • ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ের ওপর বেশি নির্ভরতা আপনার ঘুমের ক্ষতি করতে পারে, পরিনতিতে আপনি ক্লান্ত বোধ করতে পারেন।

  • এমনকি পানিশূন্যতাও শক্তি হ্রাস করে আপনাকে ক্লান্ত করতে পারে। পর্যাপ্ত তরল পানীয় পান নিশ্চিত করুন।

  • স্থূলতা ঘুমের গুণগত মান কমিয়ে দিতে পারে।

  • শারীরিক স্থূলতার সঙ্গে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো রোগের সংযোগ রয়েছে , যার কারণে সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে।

  • মাদক বা অ্যালকোহল পানের কারণেও হতে পারে।

আরও পড়ুন

মুক্তি পেতে করণীয়

  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে।

  • জাঙ্কফুড এড়িয়ে চলুন।

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।

  • নিয়ম করে শরীরচর্চা করুন।

  • মদ ও ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

  • পর্যাপ্ত ঘুমের দিকে নজর দিন।

  • এতেও যদি না কমে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

*ডা. নওসাবাহ্ নূর: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, পপুলার মেডিকেল কলেজ, ঢাকা