সঠিকভাবে জ্বর মাপার নিয়ম কী
সময়টা মন্দ, জ্বরের মৌসুম। শরীরটা একটু গরম লাগলেই মনে জাগছে শঙ্কা—জ্বর হলো না তো? ডেঙ্গু না তো? যেকোনো ধরনের জ্বরের ক্ষেত্রেই সঠিকভাবে জ্বর মাপাটা ভীষণ জরুরি। জ্বরের ধরন বা প্যাটার্ন; অর্থাৎ জ্বরের মাত্রা, জ্বর কখন আসছে, কখন যাচ্ছে, জ্বরের ওষুধ খেয়ে জ্বর কমছে কি না—এসব নানা বিষয় থেকে একজন চিকিৎসক আপনার রোগ সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।
বাড়িতে একটা থার্মোমিটার অবশ্যই রাখবেন। জ্বর জ্বর অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে জ্বর মাপতে হবে। জ্বর মাপার নিয়মগুলোও বাড়ির প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যের জেনে রাখা দরকার।
মুখে জ্বর মাপার ক্ষেত্রে
খাবার, পানি বা পানীয় খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর জ্বর মাপতে হবে।
জিভের নিচে থার্মোমিটার রেখে মুখ বন্ধ করে পুরো এক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।রোগী যদি মুখ দিয়ে শ্বাস নেন, তাহলে মুখে জ্বর মাপতে অসুবিধা হতে পারে। শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রেও তাই। এসব ক্ষেত্রে ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করুন।
শিশুর জ্বর মাপা যায় পায়ুপথে
তিন বছরের কম বয়সীদের পায়ুপথে তাপমাত্রা দেখতে হবে। এ ক্ষেত্রে জ্বর মাপার আগে থার্মোমিটারের সামনের অংশে পেট্রোলিয়াম জেলি মাখিয়ে নিতে হবে। শিশুকে চিত করে শুইয়ে দিন। পা দুটি তুলে থার্মোমিটারের আধা ইঞ্চি বা এক ইঞ্চি পরিমাণ ঢুকিয়ে দিতে হবে পায়ুপথের ভেতরে, ছয় মাসের কম বয়সী শিশুর জন্য আধা ইঞ্চিই যথেষ্ট। এক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। চিত অবস্থায় অসুবিধা হলে উপুড় করেও শোয়াতে পারেন।
বগলে জ্বর মাপা
বগলে জ্বর মাপলে খুব একটা নিখুঁত ফলাফল পাওয়া যায় না। তবে অন্য স্থানে তাপমাত্রা মাপতে অস্বস্তি হলে বগলে মাপা ছাড়া উপায় নেই। এ ক্ষেত্রে বগলে থার্মোমিটার ভালোভাবে চেপে রাখতে হবে পুরো দুই মিনিট। খেয়াল রাখতে হবে, থার্মোমিটারের সামনের অংশ যেন ত্বকের সংস্পর্শেই থাকে, কাপড়ে লেগে না যায়। তা ছাড়া বগলে থার্মোমিটার দেওয়ার আগে বগল মুছে নেওয়া উচিত, যেন ঘাম না থাকে।
আরও জেনে নিন
থার্মোমিটার ব্যবহারের আগে সাবান এবং কুসুম গরম পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। ব্যবহারের আগে পরে থার্মোমিটারটি অ্যালকোহল প্যাড দিয়ে মুছে নিন।
ডিজিটাল থার্মোমিটারের ব্যবহার-নির্দেশিকা দেখে সময় ও অন্যান্য বিষয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করুন।মুখ, বগল, পায়ুপথ—দেহের বিভিন্ন অংশে তাপমাত্রা মাপতে অবশ্যই আলাদা আলাদা থার্মোমিটার ব্যবহার করুন। কোন থার্মোমিটার দিয়ে কোন অংশের তাপমাত্রা দেখা হয়, সেটির কোনো চিহ্ন দিয়ে রাখুন, যেন ভুল না হয়।
কানে বা কপালে জ্বর মাপার উপযোগী থার্মোমিটারও পাওয়া যায়। প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নির্দেশিকা অনুযায়ী এগুলো ব্যবহার করুন।