উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা কি ওরস্যালাইন খেতে পারবেন?

উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বাড়তি লবণ খাওয়া মানা। পাতে বাড়তি লবণ তো তাঁদের বাদ দিতেই হয়, টক ফল বা সালাদের সঙ্গে লবণ, বিট লবণ প্রভৃতি গ্রহণেও রয়েছে বারণ। কিন্তু ওরস্যালাইনে যে লবণ থাকে, প্রয়োজন হলে সেই ওরস্যালাইন কি তাঁরা খেতে পারবেন?

মুখে খাবার ওরস্যালাইন খেতে বলা হয় শরীরে লবণপানির ঘাটতি দেখা দিলে বা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হলে (যেমন ডায়রিয়া বা বমি হলে)। উচ্চ রক্তচাপের রোগীর যদি ডায়রিয়া বা বমি হয়, তখন তাঁদের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে লবণ খাবার নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়ে যায়। ডায়রিয়া বা বমি হলে রোগীর রক্তচাপ কমে যেতে পারে, শরীরের স্বাভাবিক লবণের মাত্রা কমে যেতে পারে, এ ছাড়া পানিশূন্যতা থেকে কিডনি বৈকল্যের ঝুঁকিও থাকে। তাই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে অন্যান্য রোগীর মতোই উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্যও স্যালাইনের কোনো বিকল্প নেই। স্যালাইনই এই সময় তাঁর জন্য জীবন রক্ষাকারী ভূমিকা পালন করবে। প্যাকেটের ওরস্যালাইন হোক কিংবা ঘরে তৈরি স্যালাইন—যেকোনোটা দিয়েই রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা প্রয়োজন হলে ওরস্যালাইন খেতে পারবেন
ছবি: সংগৃহীত

জেনে রাখুন

১. অন্যদের মতো উচ্চ রক্তচাপের রোগীদেরও প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরপরই পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যালাইন খেতে হবে।

২. পাতলা পায়খানা বন্ধ করার জন্য প্রচলিত ওষুধ গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডায়রিয়া বন্ধ করার জন্য কোনো ওষুধ লাগে না।

৩. নিজে নিজে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধও খাওয়া যাবে না। অনেকে ডায়রিয়া হলে নিজে নিজেই সিপ্রোসিন, ফ্লাজিল জাতীয় বড়ি খেতে শুরু করে দেন। জেনে রাখুন, এগুলো কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক। আর চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া নিষেধ।

৪. বমি হলে অল্প অল্প করে স্যালাইন খাওয়া উচিত, ধীরে ধীরে স্যালাইনের পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে।

ডায়রিয়া বা বমির সময়, যখন আপনার শরীর দ্রুত লবণপানি হারাচ্ছে, তখন স্যালাইন খেলে কিন্তু স্যালাইনের কারণে রক্তচাপ বাড়ে না। বরং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখার জন্য, অর্থাৎ রক্তচাপ যাতে অনেক কমে না যায়, সে জন্য স্যালাইন প্রয়োজন। গুরুতর ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে শিরাপথেও স্যালাইন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।