শীতের রাতেও ঘেমেনেয়ে উঠছেন?

শীতের রাতেও অনেকেই উষ্ণতায় ঘেমেনেয়ে উঠেন
ছবিটি প্রতীকী।

সাধারণভাবে শীতের রাত বলতেই লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে জবুথবু হয়ে শুয়ে থাকার কথা মনে হয়। তবে প্রতিবছর শীতের তীব্রতা এক রকম থাকে না। আবার এক শীত মৌসুমেই রোজকার তাপমাত্রা এক হয় না।

তাই এমনটা হতেই পারে যে শীতের রাতেও আপনি লেপ-কাঁথার উষ্ণতায় ঘেমেনেয়ে উঠছেন। আবহাওয়ার তারতম্য তো স্বাভাবিক কারণ। এর বাইরেও কিন্তু এমন সমস্যার পেছনে অন্যান্য কারণ থাকতে পারে।

সাধারণত শেষরাতে কিংবা ভোরের দিকে তাপমাত্রা একটু নেমে যায়। অর্থাৎ আমরা ঠান্ডা অনুভব করি। আবার শীতের প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় কাপড় পরে, ভারী লেপ বা কম্বল গায়ে চাপিয়ে শুয়ে পড়লে মাঝরাতে কিন্তু হঠাৎ গরম লেগে উঠতে পারে।

তাই সব ধরনের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে শীতের কাপড় এবং লেপ-কম্বল বা কমফোর্টার বেছে নিতে হবে বলে জানালেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন।

নারীদের মেনোপজের পরেও হুট করে গরম লাগার সমস্যা দেখা দিতে পারে
প্রতীকী ছবি

যা পরবেন এবং যা গায়ে দেবেন

  • প্রয়োজন বুঝে স্তরে স্তরে কয়েকটি হালকা পোশাক পরুন। ভেতরের স্তরটি সাদামাটা নকশার, হালকা রঙের, সুতি কাপড়ের হলে ভালো হয়। প্রয়োজনে পোশাকের স্তরের সংখ্যা কমবেশি করতে পারবেন। একটা ভারী পোশাক পরলে কিন্তু এ সুবিধা পাবেন না।

  • একইভাবে একটা ভারী লেপ, কম্বল বা কমফোর্টারের পরিবর্তে হালকা কয়েকটি স্তরের ব্যবস্থা করলে ভালো হয়, যাতে প্রয়োজনে স্তরের সংখ্যা কমবেশি করা যায়। কাজে লাগাতে পারেন বিভিন্ন পুরু কাঁথাও।

  • পায়ের ঠান্ডার বিষয়ে উদাসীন থাকেন কেউ কেউ, ভারী পোশাক দিয়ে কেবল শরীরের ওপরের অংশটা ঢাকেন। তাতে কিন্তু খানিক পরেই শীত লাগতে পারে। তাই শীত থাকলে প্রয়োজনে মোজা পরুন। এ ছাড়া ঠান্ডা আবহাওয়ায় তুলনামূলক ভারী কাপড়ের পায়জামা পরা উচিত। কিন্তু যেদিন তাপমাত্রা অতটা কম নয়, সেদিন এ ধরনের পোশাক বা অনুষঙ্গ এড়িয়ে চলতে হবে।

সবার গরম বা শীতের অনুভূতি এক নয়
ছবি: পেকজেলসডটকম

গরম লাগার ভয় থাকলে

এই শীত লাগছে, তো এই গরম। কিন্তু অনুভূতির এ রকম ভিন্নতার কারণে বারবার উঠে গিয়ে ফ্যান চালানো কিংবা বন্ধ করার প্রয়োজন হলে তো আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। এ ক্ষেত্রে আপনি কিছু প্রযুক্তির সহায়তা নিতে পারেন, যাতে ঘুমে খুব একটা ব্যাঘাত না ঘটে। এই যেমন আপনি মাথার কাছে ব্যাটারিচালিত ছোট ফ্যান রাখতে পারেন অনায়াসেই। সুযোগ থাকলে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে শোয়া অবস্থাতেই সিলিং ফ্যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে পারেন।

শেষ কথা

সবার গরম বা শীতের অনুভূতি এক নয়। ছোট্ট শিশুর শরীর যেমন একটুতেই ঠান্ডা হয়ে যায়, তেমনি একটুতেই ঘেমেও যায় ওরা। আবার বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি কিংবা দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহের স্বাভাবিক চর্বির পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে তাঁদের কিন্তু কম শীতেও বেশি কষ্ট হতে পারে। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখুন।

এ ছাড়া রক্তস্বল্পতা কিংবা থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য থাকলে আপনার গরম বা ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা অন্যান্য সুস্থ মানুষের চেয়ে আলাদা হতে পারে। তাই তাপমাত্রার সঙ্গে আপনার ঠান্ডা-গরমের অনুভূতিটির মিল না থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। নারীদের মেনোপজের পরেও হুট করে গরম লাগার সমস্যা দেখা দিতে পারে।