শীত দোরগোড়ায়। ভোরে আর সন্ধ্যায় হিমেল বাতাস বইছে। কুয়াশাও পড়তে শুরু করেছে। পরিবেশের এমন পরিবর্তনে ঠান্ডায় শিশুদের বাড়তে পারে গলাব্যথা, গলা খুসখুস। এ ব্যথার কারণ মূলত গলার প্রদাহ।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই প্রদাহ ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণে হতে পারে। এ ছাড়া ধূমপান, শুষ্ক বাতাস, তামাক অথবা বায়ুদূষণের কারণেও এমনটা হতে পারে। নাকের সংক্রমণ হাঁচি বা নিষ্কাশনের সময় গলার দিকে চলে যায় এবং এর ফলে গলায় সংক্রমণ হতে পারে।
লক্ষণ
শিশুদের গলায় ব্যথাসহ খুসখুসে অনুভূতি হয়। এর ফলে যন্ত্রণা ভোগ করে তারা। কিছু খেতে কষ্ট হয়। কাশি হতে পারে। গলার স্বর কর্কশ হতে পারে। গলার দুই পাশে গ্রন্থি ফুলে যায়। গলার ভেতরে লালচে ভাব হয়, অস্বস্তিকর ফোলা ভাব দেখা দেয়। নাক দিয়ে পানি পড়ে, জ্বর, বমি, মাথাব্যথা এবং হাঁচি ইত্যাদি দেখা দেয়।
৩ থেকে ১৫ বছরের শিশুর গলার সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। সাধারণত ব্যাকটেরিয়াজনিত প্রদাহ হলে তার কারণ স্ট্রেপটোকক্কাস পায়োজেনাস।
চিকিৎসা
স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হবে। যেসব শিশুর স্ট্রেপ সংক্রমণ হবে, তাদের অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শেষ করতে হবে। ভাইরাল সংক্রমণের কারণে গলাব্যথা হলে তেমন কোনো চিকিৎসা ছাড়াই তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে সেরে যায়। অ্যালার্জির কারণে গলায় ব্যথা হলে সারতে বেশি সময় লাগে।
যদি গলাব্যথার পাশাপাশি জ্বর থাকে, তবে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। গরম লবণপানির গড়গড়া করা যেতে পারে।
কখনো কখনো ফ্লু, সাধারণ ঠান্ডা লাগা, হাম, গনোরিয়া, চিকেনপক্স, মনোনিউক্লিওসিস এবং ক্রুপ হলেও প্রচণ্ড গলাব্যথা হতে পারে। তাই জ্বর, গলাব্যথা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সাবেক অধ্যাপক ও পরিচালক, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, ঢাকা।