ভ্রমণে সুস্থ থাকুন

ঈদের ছুটি, স্কুল বন্ধ। এ সময় অনেকেই গ্রামের বাড়ি ও এদিক–ওদিক বেড়াতে যাবেন। বর্ষায় আবহাওয়া বদলের কারণে এ সময় সর্দি, হাঁচি-কাশি, জ্বরের মতো কিছু অসুখ যেমন হয়; তেমনি বাড়ে খাদ্য ও পানিবাহিত কিছু সংক্রামক ব্যাধি। তাই ভ্রমণে গেলে এসব জটিলতায় ভোগার আশঙ্কা কিছুটা বেশি থাকে।

করণীয়

  • ভ্রমণে গেলে বাইরের খাবার বেশি খাওয়া হয়। কলেরা, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, জন্ডিসের মতো খাবার ও পানিবাহিত রোগ বেশি হয় বলে খাবার ও পানীয় জলের ব্যাপারে খুব সচেতন থাকতে হবে। বাসনপত্র ভালো করে সাবানপানিতে ধুয়ে নিতে হবে। মিনারেল ওয়াটার কিংবা ফোটানো পানির ব্যবস্থা করাও জরুরি। প্রয়োজনে পানি পরিশোধক ট্যাবলেট সঙ্গে রাখুন। যাঁরা দুর্গম অঞ্চলে যাবেন, অবশ্যই পর্যাপ্ত খাওয়ার স্যালাইন নেবেন।

  • বর্ষায়–গরমে এমনিতেই ঘাম বেশি হয়। পানিশূন্যতা রোধে ভ্রমণে খেতে হবে পর্যাপ্ত তরল বা তরলজাতীয় খাবার। শরীরে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যম হচ্ছে আমাদের হাত। তাই ভ্রমণে সঙ্গে রাখতে হবে জীবাণুনাশক সাবান, হ্যান্ডওয়াশ ইত্যাদি। নিয়মিত হাত ধুতে হবে, বিশেষ করে খাবার গ্রহণের আগে। নিয়মিত সাবান দিয়ে গোসল করলে জীবাণুর সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

  • বর্ষায় প্রাণঘাতী ডেঙ্গু ছাড়াও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। তাই মশার কামড় থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে সঙ্গে নিতে হবে মশারি, মশার ওষুধ বা মশারধী ক্রিম।

  • এ সময়ে প্রকৃতির আচরণ থাকে অনিশ্চিত। এই রোদ তো এই বৃষ্টি। রোদ-বৃষ্টির খেলায় ভিজে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তাই সঙ্গে থাকতে হবে ছাতা বা রেইনকোট। ঋতু বদলজনিত ঠান্ডা–কাশি, গলাব্যথা, জ্বরের সময় বলেই ভ্রমণে ছোট্ট একটি মেডিসিন বক্স রাখুন। এতে রাখতে পারেন প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ, খাওয়ার স্যালাইন, কাটাছেঁড়ার জন্য থাকতে পারে জীবাণুনাশক ক্রিম।

  • বৃষ্টিভেজা পথে হেঁটে চলতে ভালোবাসেন কেউ কেউ। খেয়াল রাখতে হবে, এই সুযোগে পায়ের তালু দিয়ে ঢুকে যেতে পারে হুকওয়ার্ম। জোঁকের কথাও ভুললে চলবে না। পাহাড়ি এলাকায় গেলে সাপ বা জোঁকের আক্রমণ থেকে রক্ষায় হাঁটু পর্যন্ত লম্বা জুতা পরতে পারেন। এ মৌসুমে অহেতুক শারীরিক জটিলতা এড়াতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম বা ঘুম, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের দিকেও খেয়াল রাখা জরুরি।

সবচেয়ে ভালো হয় শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো। এ জন্য যেখানেই থাকুন, খেতে পারেন ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবার, যেমন ফল ও শাকসবজি। সঙ্গে খাদ্যতালিকায় যুক্ত হতে পারে লেবু বা আদা–চা, ফলের রস ইত্যাদি।

  • ডা. শাহনূর শারমিন, সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ