কম বয়সে স্ট্রোক হয় কেন

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে যে স্ট্রোক হয়, সেটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চরক্তচাপের কারণে
ছবি: পেক্সেলস

স্ট্রোক মস্তিষ্কের এক জটিল রোগ। এ রোগে মৃত্যুঝুঁকি থাকে। এমনকি যাঁরা বেঁচে যান, তাঁদের পরবর্তীতে বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে। সুতরাং স্ট্রোক কাদের হয় ও কেন হয়, সেটা জানা জরুরি।

স্ট্রোক কি কম বয়সে হয়

একটা সময় পর্যন্ত ধারণা ছিল, স্ট্রোক শুধু বয়স্কদেরই হয়। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল, ধূমপান—এগুলো স্ট্রোকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এ সমস্যাগুলো আগে বেশি বয়সে হতো বলে বয়স্ক স্ট্রোকের রোগী বেশি পাওয়া যেত। সম্প্রতি এ ধারা পরিবর্তন হয়েছে। স্ট্রোক এখন কম বয়সেও দেখা যাচ্ছে।

কম বয়সে স্ট্রোকের কারণ

স্ট্রোক দুই প্রকারের হয়। একটি মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে হয়, আরেকটি মস্তিষ্কে রক্তপাত হয়ে। দুই প্রকারের কারণও ভিন্ন। যেমন রক্ত জমাট বাঁধা স্ট্রোকের সঙ্গে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল, ধূমপান ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। যাঁদের এ সমস্যাগুলো থাকে, তাঁদের এ ধরনের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এখন অনেক কম বয়সে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সে কারণে কম বয়সে অনেকেরই স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

আবার কিছু রোগ আছে, যেগুলোতে রক্ত ঘন ও জমাট বাধার প্রবণতা বেড়ে যায়। এদের মধ্যে কিছু রোগ জন্মগত ও বংশগত হতে পারে। সেসব রোগ অল্প বয়সেই প্রকাশ পায়। তাদের মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হয়। কিছু রক্তরোগের জটিলতার কারণে স্ট্রোক যেকোনো বয়সেই হতে পারে। আবার কিছু রোগে রক্ত জমাট বাঁধার পর, সেই জমাট রক্ত ছুটে গিয়ে মস্তিষ্কে চলে যায়। হার্টের ভালভের রোগ, কিছু বাতরোগে এ রকম হয়।

রক্তনালির বিভিন্ন গঠনগত পরিবর্তন ও জটিলতা থেকেও অল্প বয়সে স্ট্রোক হয়ে যায়


মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে যে স্ট্রোক হয়, সেটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চরক্তচাপের কারণে। কিছু মাদকসেবনে এ রকম উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে। রক্তনালির বিভিন্ন গঠনগত পরিবর্তন ও জটিলতা থেকেও অল্প বয়সে স্ট্রোক হয়ে যায়। অনেকে পরিবারে এ রকম হিস্ট্রি থাকলে তাঁদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে।
অনেক রোগের জটিলতায় স্ট্রোক হয়। আবার কিছু রোগ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়, তা সে যে বয়সেরই হোক না কেন। সুতরাং স্ট্রোক যে কম বয়সে হতে পারে, সেটা সকলেরই মাথায় রাখা উচিত ও প্রয়োজনে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Photo from pexels by Tony Sugathan and Mahdi Bafande