মুখের দুর্গন্ধ কি শুধু মুখ থেকেই আসে?
মুখের দুর্গন্ধ বিব্রতকর একটি সমস্যা। এ সমস্যাটার সমাধান কিন্তু খুব সহজ—জীবনযাত্রায় ইতিবাচক কিছু পরিবর্তন। আর এর পেছনে যদি আলাদা কোনো কারণ দায়ী থাকে, তাহলে সেটির চিকিৎসাও প্রয়োজন।
প্রতিটি মানুষের মুখ, দাঁত ও জিহ্বায় স্বাভাবিকভাবেই কিছু জীবাণু থাকে। এগুলো নিজের সুস্থতার জন্যই প্রয়োজনীয়। তবে এসব ব্যাকটেরিয়া থেকে এমন কিছু উদ্বায়ী পদার্থ তৈরি হয়, যা মুখের দুর্গন্ধের জন্য দায়ী। মুখের স্বাভাবিক লালা সঞ্চারণের ফলে এমন দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী পদার্থ জমা হতে পারে না, তাই সাধারণত সারা দিনে মুখে তেমন দুর্গন্ধ হয় না। ঘুমালে লালা সঞ্চারণ কমে যায়, ফলে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখের দুর্গন্ধ হয় অনেকেরই। নিয়মিত সঠিক উপায়ে দাঁত ব্রাশ, খাওয়ার পরে কুলকুচি, প্রয়োজনে ফ্লস ব্যবহার, মাউথওয়াশ ব্যবহার করার মাধ্যমে সহজেই এমন সমস্যা এড়ানো যায়।
ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ছাড়াও যেসব কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে—
খাবারদাবার এবং অভ্যাস
পেঁয়াজ, রসুন, কমলালেবুর রস এবং কিছু মসলার কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। এ ছাড়া যেকোনো খাবার দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলেও কিন্তু মুখে দুর্গন্ধ হয়। তাই না খেয়ে থাকতে হলে (যেমন পবিত্র রমজানে রোজা রেখে কিংবা উপবাসের সময়) মুখ পরিষ্কার রাখার প্রতি বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। যাঁরা অ্যালকোহল কিংবা ধূমপান করেন, তাঁদের মুখেও দুর্গন্ধ হয়। পান, সুপারি, জর্দা, গুল প্রভৃতিও দুর্গন্ধের কারণ।
মুখের আরও ব্যাপারস্যাপার
মুখ যাঁদের শুষ্ক হয়ে থাকে, তাঁদেরও মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রবণতা বেশি। মুখ খোলা রেখে যাঁরা ঘুমান, তাঁদের মুখ শুষ্ক হয়ে থাকে। আবার কিছু ওষুধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও মুখ শুষ্ক হয়ে যায়।
দুর্গন্ধের অন্যান্য কারণ
শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ
সাইনাসে দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ
গলার পেছনের অংশে কফ জমা হওয়া
বদহজম
ডায়াবেটিস
লিভার বা কিডনির কিছু রোগ
দুর্গন্ধের সমাধান
মুখ পরিষ্কার করার সময় জিহ্বাও (গোড়ার দিকটাসহ) পরিষ্কার করুন।
ঘুমের আগে মাউথওয়াশ ব্যবহারের অভ্যাস করুন।
চিনিবিহীন চুইংগাম চিবাতে পারেন।
মুখ শুকনা বোধ করলেই একটু পানি খেয়ে নিন, যাতে অন্তত গলাটা ভেজে।
পান, সুপারি, জর্দা, গুল, সিগারেট এবং অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
যখন চিকিৎসা প্রয়োজন
সব চেষ্টার পরও মুখে দুর্গন্ধ রয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দাঁত বা মাড়ির কোনো অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকলে সেটির চিকিৎসা নিন। আর কফ-কাশি, হজমের সমস্যা কিংবা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা গেলে সেটির চিকিৎসা তো নেবেনই।