দেশে দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী। বাড়ছে মৃত্যুও। ডেঙ্গু জ্বর প্রসঙ্গে জরুরি পাঁচটি বিষয় জেনে নেওয়া যাক।
কারও মৃদু, কারও জটিল ডেঙ্গু কেন
কোনো ব্যক্তি প্রথম ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে তাঁর জটিলতার ঝুঁকি কম। পরে আবার সংক্রমণ হলে ঝুঁকি বাড়ে। কারণ, প্রথমবার সংক্রমণের সময় শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণুর বিরুদ্ধে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, পরে ভাইরাসের ভিন্ন ধরন শরীরে ঢুকলে আগের অ্যান্টিবডি একে ধ্বংস করতে পারে না।
তবে ভাইরাসকে ধ্বংসের চেষ্টা সক্রিয় হয়ে ওঠে বলে রক্তে রাসায়নিক সাইটোকাইনের মাত্রা বেড়ে যায়। ডেঙ্গু জ্বর কতটা জটিল হবে, তা নির্ভর করে সাইটোকাইনের ওপর। আবার ভাইরাস রক্তের মনোসাইট নামক শ্বেত রক্তকণিকায় ঢুকলে সাইটোকাইন বেড়ে যায়। সাইটোকাইন কতটা বাড়ছে, তার ওপরই নির্ভর করে ডেঙ্গুর জটিলতা।
ডেঙ্গু জ্বরে কেন প্লাটিলেট কমে
রক্তকণিকা তৈরি হয় অস্থিমজ্জায়। সেখানে ভাইরাস আক্রমণ করলে প্লাটিলেট রক্তকণিকা তৈরি হতে পারে না। এ ছাড়া সাইটোকাইনের প্রভাবে রক্তনালিতে সৃষ্ট ছোট ছোট ক্ষতকে সারাতে গিয়ে রক্তের প্লাটিলেট কমে যায়। ভাইরাসের সরাসরি আক্রমণেও প্লাটিলেট ধ্বংস হয়।
জ্বর সেরে গেলেও কেন সতর্কতা
ভাইরাসের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হলে জ্বর সেরে যায়। আর অ্যান্টিবডি বাড়তে শুরু করলে তা ভাইরাসকে ধ্বংস করতে থাকে এবং এতে সাইটোকাইন বেড়ে যায়। এর প্রভাবে রক্তের জলীয় অংশ রক্তনালি থেকে বেরিয়ে আসে। ফলে রক্তচাপ কমে যায়, এতে রোগী শকে চলে যেতে পারে। এ ছাড়া প্লাটিলেটও কমে। তাই জ্বর সারলেও অন্তত এক সপ্তাহ পর্যাপ্ত তরল খাবার খেতে হবে এবং বিশ্রামে থাকতে হবে।
বাড়িঘর, বারান্দা এডিস মশামুক্ত রাখতে কী করতে হবে
কোথাও তিন দিনের বেশি সময় পানি জমে থাকতে দেওয়া যাবে না। টব, টায়ার, ডাবের খোসা, এমনকি খানাখন্দে পানি জমতে পারে। ফ্রিজ বা এসি, বাথরুম, অব্যবহৃত কমোড কিংবা নির্মাণাধীন ভবনে জমে থাকা পানিতে মশা জন্মাতে পারে। এসব ক্ষেত্রে যত্নবান হতে হবে। প্রতিবেশীর বাড়িতে এমন কিছু দেখলে তাঁকেও বলতে হবে।
ডেঙ্গু ভ্যাকসিন কি সত্যি আসবে
আইসিডিডিআরবিতে ডেঙ্গুর টিকা নিয়ে গবেষণা চলছে। বর্তমানে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দ্বিতীয় পর্যায় চলছে। সব ধাপ শেষ করে টিকা আনতে সময় আরও লাগবে।
অধ্যাপক ডা. এস এম সামসুজ্জামান, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ